একই ভুল বারবার করছি: ডু প্লেসিস

বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার ‘মধ্য মানের’ খেলার সমালোচনা করলেন অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস। তিনি বলেন, দুর্বল পারফর্ম করা ‘মধ্য মানের’ দলটি চ্যালেঞ্জ নেয়ার দক্ষতা প্রদর্শনে ব্যর্থ হওয়ায় এভাবে ধরাশায়ী হয়েছে।

রবিবার লর্ডসে ধুকতে থাকা পাকিস্তানের কাছে ৪৯ রানে পরাজিত হওয়ায় বিশ্বকাপের শেষ চারে খেলার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার। টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বে তাদের হাতে রয়েছে আর মাত্র দুটি ম্যাচ। এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত টুর্নামেন্টের নকআউট পর্বে খেলতে ব্যর্থ হলো দক্ষিণ আফ্রিকা।

অলসতা এতটাই বেশি ছিল যে, পাকিস্তানের ছুঁড়ে দেয়া ৭ উইকেটে ৩০৮ রানের জবাবে ৯ উইকেটে ২৫৯ করতেই ঘাম ঝড়েছে প্রোটিয়াদের। যা হজম করা ডুপ্লেসিসের জন্য বেশ কঠিন। তিনি বলেন, ‘এই মুহুর্তে আমাদের যে ফল তা অত্যন্ত কঠিন। আমাদের খেলা বিব্রতকর পরিস্থির শেষ সীমায় চলে গেছে।

শুরুটা বোলিং থেকেই। অনেক বেশি বাজে বল হয়েছে। যদি শুধুমাত্র লাইন ও লেন্থ ঠিক থাকতো তবে ব্যাটসম্যানদের রান তোলা কঠিন হতো।’

প্রোটিয়া অধিনায়ক বলেন, ‘বোলিং পারফরমেন্স বিবেচনায় দশ এর মধ্যে পাঁচ পাওযা যেতে পারে, ব্যাটিংয়েও একই অবস্থা। অথচ ব্যাটিংটা বেশ ভাল শুরু করেছিলাম। ভাল একটি পার্টনারশীপ হতে হতেই উইকেট হারালাম।

এই মুহুর্তে আমাদের দলটি মধ্যমানে নেমে গেছে। কারণ আমরা বারবার একই ভুল করছি। এক ধাপ এগিয়ে গেলে দুই ধাপ পিছিয়ে যাওয়াটা ভাল কোন দলের লক্ষণ হতে পারে না।’

দলের খেলোয়াড়রা ধারাবাহিক আস্থাহীনতায় ছিল বলে মন্তব্য করেন ডু প্লেসিস। রবিবার দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেন অধিনায়ক। কিন্তু তার ওই অতি সাবধানতা দলের কোন কাজেই আসেনি। এরপর বেপরোয়া ভাবে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে সাজ ঘরে ফিরে আসেন খেলোয়াড়রা। ফলে হাতছাড়া হয়ে যায় ম্যাচটি।

ডু প্লেসিস বলেন, ‘আমাদের আত্মবিশ্বাস তলানিতে ঠেকেছে এবং বারবার একই ভুল করেছি। বাস্তব কথা হচ্ছে সহজেই এটি আমাদের দূরে ঠেলে দিয়েছে। আপনি সত্যিই হয়তো কঠোর পরিশ্রম করেছেন। পরের ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু একই ভুল করেছেন। এতে আপনাকে খেলোয়াড়ী মানসিকতা এবং আত্মবিশ্বাস থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।’

হতাশ দক্ষিণ আফ্রিকা এ পর্যন্ত চলতি বিশ্বকাপে সাত ম্যাচে অংশ নিলেও ৫টি ম্যাচেই পরাজিত হয়েছে। শুধুমাত্র একটি ম্যাচে জয় পেয়েছে, তাও দুর্বল আফগানিস্তানের বিপক্ষে। দলের খেলোয়াড়দেরকে এই সমস্যা খুঁজে বের করে সেখান থেকে মুক্তি লাভের আহ্বান জানান প্রোটিয়া অধিনায়ক।

তিনি বলেন, ‘কোচ বা আমি, একটি কথাই বলতে চাই, আপনি যদি আস্তাহীনতায় ভোগেন, তাহলে অবশ্যই উচিৎ হবে নিজ উদ্যোগে সেটি খুঁজে বের করে সমস্যা সমাধানের চেস্টা করা। সবাই দীর্ঘ সময় ধরেই এই খেলাটি খেলছেন। নিজেকেই উচু বা নিচু মান সম্পর্কে বুঝে নিতে হবে।’

ডু প্লেসিস বলেন, এটি তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কম পয়েন্টে বিদায় নেয়ার ঘটনা। তিনি বলেন, ‘একজন খেলোয়াড় এবং দলনেতা হিসেবে আমি গর্বিত। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলা মানে আমার জন্য বিশাল কিছু। এখন মানুষ আমাদের সমালোচনা করছেন। এটি যথার্থই। কারণ আমরা সেই ক্রিকেট খেলছি না। যেমনটি খেলা উচিৎ ছিল। আমার নিজের জন্য, কোচের জন্য এবং দলের সিনিয়র সদস্যদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এগিয়ে এসে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করা।’

(ঢাকাটাইমস/২৩ জুন/এসইউএল)