ছাত্রদলে বিভেদে নয়াপল্টনে ককটেল, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

প্রকাশ | ২৪ জুন ২০১৯, ১৮:৩০

নিজস্ব প্রতিবেদ, ঢাকাটাইমস

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণের মতো ঘটনা ঘটেছে। আর সবই হয়েছে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে।

আগামী ১৫ জুলাই ছাত্রদলের সম্মেলন বাতিলের দাবিতে সোচ্চার সংগঠনের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির নেতারা। অন্যদিকে সম্মেলনের তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মিছিল করে পদপ্রত্যাশীরা।

বয়সসীমা তুলে দেয়াসহ বেশ কিছুতে আন্দোলন করা ছাত্রদলের সাবেক নেতারা কর্মসূচি শেষে ফেরার সময় সেখানে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। এতে একজন আহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও বয়সসীমা না করে ধারাবাহিক কমিটি গঠনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন ছাত্রদলের বহিষ্কৃত নেতারা ও তাদের অনুসারীরা। এ সময় বিএনপি কার্যালয়ের কলাপসিবল গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা কাউকে ঢুকতে দেননি।

বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন কার্যালয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে বাধা দেওয়া হয়। কার্যালয়ে প্রবেশ করতে না পেরে ফিরে যান মিলন।

কার্যালয়ের ভেতরে আগে থেকেই ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও মহানগর বিএনপির কয়েকশ নেতাকর্মী অবস্থান নেন। কার্যালয়ের আশেপাশে ছাত্রদল এবং বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন।

কার্যালয়ের ভেতরে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ছাত্রদলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের।

আন্দোলনকারীরা কার্যালয়ের গেট আটকানোর সময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। ভেতরে অবস্থানরত ও বাইরের আন্দোলনকারী ছাত্রদল নেতাকর্মীদের মধ্যে এ সময় টানাহেঁচড়া, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

বহিষ্কৃত ছাত্রদলের নেতাদের বিক্ষোভ শেষে দুপুর দেড়টার দিকে ছাত্রদলের একটি অংশ ১৫ জুলাই ঘোষিত তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল করেন। তারা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

বিক্ষোভ শেষে বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ওমর ফারুক মুন্না বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার আগে আমাদের বলা হয়েছিল বিএনপির সিনিয়র নেতারা আমাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। কিন্তু আলোচনা না করেই তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা এর নিন্দা জানাই। আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে পুনঃতফসিল ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি।’

কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে মুন্না বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু একটি পক্ষ অপ্রীতিকর ঘটনা চাচ্ছে। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সিন্ডিকেট দায়ী থাকবে। আগামীকালও কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কর্মসূচিতে আসব।’

ছাত্রদলের ১২ নেতাকে বহিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদল নেতা বলেন, ‘দল যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তাহলে দলের বাইরে আমাদের কিছু বলার নাই।’

‘আমাদের দাবি, বয়সসীমা উন্মুক্ত এবং তফসিল বাতিল করতে হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। আমরা আশা করি তারেক রহমান আমাদের বিষয়গুলোকে বিবেচনা করবেন।’

গত ২২ জুন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ছাত্রদলের ১২ নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। এর একদিন পর রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের কাউন্সিলের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এতে বলা হয়, আগামী ১৫ জুলাই ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের কাউন্সিল। ওই দিন সকাল নয়টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত কেবল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট হবে।

নতুন কমিটিতে নেতা হওয়ার যোগ্যতা হিসেবে ২০০০ সাল থেকে পরবর্তী যেকোনো বছরে এসএসসি/সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে বলে জানানো হয়। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ১১ জুন থেকে থেমে থেমে বিক্ষোভ করছে ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির একাংশ।

(ঢাকাটাইমস/২৪জুন/বিইউ/ডব্লিউবি)