মাইকেল জ্যাকসনহীন ১০ বছর

প্রকাশ | ২৫ জুন ২০১৯, ০৮:২১

বিনোদন ডেস্ক

মাইকেল জ্যাকসন একজন মার্কিন সংগীতশিল্পী, গীতিকার, নৃত্যশিল্পী, অভিনেতা, সমাজসেবক ও ব্যবসায়ী। পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বহুল বিক্রিত অ্যালবামের সংগীত শিল্পীদের তিনি অন্যতম। আশির দশকে মাইকেল জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌছান। তিনিই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন সংগীতশিল্পী, যিনি এমটিভিতে এতো জনপ্রিয়তা পান। বলা হয়, তার গাওয়া গানের ভিডিওর মাধ্যমেই এমটিভির ব্যাপক প্রসার ঘটেছিল। গানের তালে তালে মাইকেলের নাচের কৌশলগুলোও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। তার জনপ্রিয় নাচের মধ্যে রয়েছে রোবোট ও মুনওয়াক।

মাইকেল জ্যাকসনকে ডাকা হতো ‘পপ কিং’ নামে। আজ সেই ‘পপ কিং’-এর দশম মৃত্যুবার্ষিকী। মাত্রাতিরিক্ত প্রপোফল সেবনে ২০০৯ সালের ২৫ জুন ৫০ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়েছিল। তার মৃত্যুতে সারা পৃথিবীতে আলোড়ন পড়ে যায়। ভেঙে পড়ে ইন্টারনেট ব্যবস্থা। মাইকেল জ্যাকসন সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য পৃথিবীর সব অঞ্চল থেকে তার ভক্ত ও সাধারণ মানুষ গুগলে সার্চ শুরু করে। মাইকেল জ্যাকসন শব্দটি মিলিয়ন মিলিয়ন বার ইনপুট হওয়ার কারণে গুগল কর্তৃপক্ষ ভাবে, তাদের সার্চ ইঞ্জিন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। যার কারণে তার মৃত্যুর দিনে আধঘণ্টা বন্ধ থাকে গুগুল। কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের ইতিহাসে এমন ঘটনা এই প্রথম।

১৯৫৮ সালের ২৯ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রে আফ্রিকান-আমেরিকান একটি পরিবারে জন্ম হয়েছিল মাইকেল জ্যাকসনের। তার ডাকনাম ছিল ওয়াকো জ্যাকো। কিন্তু নামটি খুবই অপছন্দ ছিল জ্যাকসনের। ১০ ভাই-বোনের মধ্যে অষ্টম ছিলেন মাইকেল জ্যাকসন। তার বাবা জো জ্যাকসন পেশায় ছিলেন ইস্পাত শ্রমিক। তিনি মুষ্টিযোদ্ধাও ছিলেন। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় একটি ব্যান্ডদলে গিটার বাজাতেন। মাইকেলের মা ক্যাথরিন জ্যাকসন বাড়তি উপার্জনের জন্য খ-কালীন চাকরি করতেন। পিয়ানো বাজানোতেও সিদ্ধহস্ত ছিলেন ক্যাথরিন।

মাত্র চার বছর বয়স থেকে গান গাওয়া শুরু করেন মাইকেল জ্যাকসন। পাঁচ বছর বয়সে প্রথম জনসমক্ষে গান করেন। ১৯৬৪ সালে যাত্রা শুরু করে ব্যান্ডদল ‘দ্য জ্যাকসন ফাইভ’। ব্যান্ডটির সদস্য ছিলেন মাইকেল ও তার চার ভাই। ১৯৭১ সাল থেকে মাইকেল একক শিল্পী হিসাবে গান গাইতে শুরু করেন। তার গাওয়া পাঁচটি সংগীত অ্যালবাম বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রিত রেকর্ডের মধ্যে রয়েছে। সেগুলো হলো ‘অফ দ্য ওয়াল (১৯৭৯), থ্রিলার (১৯৮২), ব্যাড (১৯৮৭), ডেঞ্জারাস (১৯৯১) এবং হিস্টরি (১৯৯৫)। এর মধ্যে ‘থ্রিলার’ আজ পর্যন্ত ১১১ মিলিয়নের উপর বিক্রি হয়েছে, যা সর্বোচ্চ বিক্রিত হওয়া অ্যালবাম।

সংগীতের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮৪ সালে আটটি গ্র্যামি পুরস্কার অর্জন করে রেকর্ড গড়েছিলেন ‘পপ কিং’। এক আসরে এতগুলো গ্র্যামি পুরস্কার ঝুলিতে ভরার রেকর্ড এত বছরেও ভাঙতে পারেননি আর কোনো সংগীতশিল্পী। জীবদ্দশায় মোট ১৩টি গ্র্যামি পুরস্কার পেয়েছিলেন মাইকেল। তিনিই সবচেয়ে বেশি অ্যাওয়ার্ড ও নমিনেশন পাওয়া তারকা। এ জন্য হলিউড ওয়াক অব ফেমে ঠাঁই পেয়েছে তার নামে দুটি তারা। একটি তার নিজের জন্য। আরেকটি জ্যাকসন ফাইভ ব্যান্ডের সদস্য হিসেবে।

ঢাকাটাইমস/২৫ জুন/এএইচ