আমি দুর্নীতি করলেও তুলে ধরুন, সাংবাদিকদের পূর্তমন্ত্রী

প্রকাশ | ২৬ জুন ২০১৯, ১৭:১৪ | আপডেট: ২৬ জুন ২০১৯, ১৭:৫৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

যেকোনো অনিয়ম, দুর্নীতি এবং যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশন করতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। আর এই সংবাদ পরিবেশন করতে গিয়ে কেউ হুমকির সম্মুখীন হলে তিনি পাশে থাকবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এমনকি তিনি নিজে দুর্নীতি করলেও তুলে ধরতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মন্ত্রী।

বুধবার সকালে রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউটের সেমিনারকক্ষে সাংবাদিকতার বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পিরোজপুর জেলার সাংবাদিকদের জন্য এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।

গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ‘অনিয়ম, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদক, ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশন করুন। কে রক্তচক্ষু দেখালো, হুমকি দিলো, সেটা বিষয় নয়। সরকারের কেবিনেটের সদস্য হিসেবে আমি আপনাদের পাশে আছি।’

নিজের স্বজন এমনকি মন্ত্রী নিজের দুর্নীতির বিরুদ্ধেও সংবাদ পরিবেশনের উৎসাহ দিয়ে বলেন, ‘আমার আত্মীয়-স্বজন বা আমার অন্যায়ের বিরুদ্ধে হলেও নিউজ করতে আমি আপনাদের উৎসাহিত করছি। তবে কারো দ্বারা প্রভাবান্বিত হয়ে কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য যেন সংবাদ পরিবেশন না হয়। সে সংবাদে সরকারি দল বা বিরোধী দলের নেতা, যেই হোক তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। গভীরে গিয়ে তথ্য অনুসন্ধান করে সংবাদ পরিবেশন করতে হবে।’

পূর্তমন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, দায়িত্ব চিরস্থায়ী। সবার জন্য কাজ করা হচ্ছে দায়িত্ববোধ। সততা, দায়িত্বশীলতা, স্বচ্ছতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করা আমার কর্তব্য। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে আমি বিশ্বাস করি। আমি এক পয়সা ঘুষ খাব না, কমিশন নেব না, অনিয়মে সম্পৃক্ত হবো না, কোনো অনিয়মকে আমি সমর্থন করবো না।’

প্রধানমন্ত্রী তথ্যের অবাধ প্রবাহে বিশ্বাস করেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন সংবাদ পরিবেশন করা সাংবাদিকের অধিকার, কৃপা নয়। তথ্যের অবাধ প্রবাহে শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন। এ কারণে তিনি তথ্য অধিকার আইন করেছেন, যাতে যেকোনো মানুষ তথ্য পেতে পারে।’

শেখ হাসিনা গণমাধ্যমকে প্রসারিত করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে সংবাদমাধ্যমকে এত বেশি প্রসারিত করা, ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে এত বেশি লাইসেন্স দেয়া, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়াকে এত বেশি কাজ করার সুযোগ শেখ হাসিনার বাইরে আর কেউ কোনোদিন দেয়নি। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও ছিল পিআইবিকে কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা, সাংবাদিকদের প্রশিক্ষিত করা।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা নাগরিক দায়িত্বের বাইরে গিয়ে একটা বড় দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন। সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। নানা রকম প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়ে আপনাদেরকে কাজ করতে হয়। মফস্বলের সংবাদাতাদের কাছে সাংবাদিকতা পেশার চেয়ে নেশা হয়ে যায়। এটাকে আমি পবিত্রতার সঙ্গে দেখি।’

প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দৈনিক যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি ও পিআইবির পরিচালনা বোর্ডের সদস্য শেখ মামুনুর রশীদ।

(ঢাকাটাইমস/২৬জুন/কারই/জেবি)