দুই দশকেও হাতে পাননি শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের পুরস্কার

আমিনুল হক সাদী, কিশোরগঞ্জ
| আপডেট : ২৬ জুন ২০১৯, ১৯:৫৬ | প্রকাশিত : ২৬ জুন ২০১৯, ১৮:৪৩

১৯৯৮ সালের জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হলেও ২১ বছর যাবত সেই পুরস্কার পাননি শিক্ষক মো. আব্দুর রশিদ ভুইয়া।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কখন এ পুরস্কারের জন্য ডাকেন সে আশায় আজো অপেক্ষায় আছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার আগরপাট্্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক এ প্রধান শিক্ষক।

ইতোমধ্যে শিক্ষকতা জীবন থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। মৃত্যুর আগে জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন পুরস্কারটি হাতে পেতে চান।

কিন্তু, শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের পদক ও পুরস্কারের সেই চিঠিটি হাতে কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও মিলছে না সেটি।

জানা গেছে, তৎকালীন ময়মনসিংহ জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির পরিচালক ড. মো. আনোয়ারুল আজিজ স্বাক্ষরিত একটি পত্র তার কাছে পাঠানো হয়। এতে তাকে ৯৮ সালের ১৮ জুন ঢাকার ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের পদক, সনদ ও নগদ পুরস্কার গ্রহণের জন্য বলা হয়।

চিঠি পেয়ে তিনি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় অবস্থান করলেও সেই তারিখে তৎকালীন বিরোধীদল হরতাল আহবান করায় অনুষ্ঠানটি বাতিল হয়। পরে ১৯৯৯ সালের ২ জানুয়ারি ড. মো. আনোয়ারুল আজিজ স্বাক্ষরিত পত্রে আইএফআইসি ব্যাংক ময়মনসিংহ শাখায় তার নামে দুই হাজার টাকার একটি চেক পাঠানো হয়। যা পাকুন্দিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে তিনি সংগ্রহ করেন।

সনদ, পদক ও পুরস্কারের জন্য অনেক বছর অতিবাহিত হলেও এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের আর কোন সাড়া না পেয়ে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পর কেবলমাত্র সনদটি পান। পুরস্কার ও পদকটি এখন পর্যন্তও পাননি।

এ বিষয়ে শিক্ষক এম এ রশিদ ভুইয়ার এ ঢাকাটাইমসকে বলেন, শিক্ষাবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও দেশের দায়িত্বে রয়েছেন। আশা করি তিনি আমার কাঙ্খিত পুরস্কারটি দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। আমি মিডিয়ার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

বর্তমানে অসুস্থ হয়ে শয্যাশয়ী এ শিক্ষক আরও বলেন, জীবনের শেষ প্রান্তে এসে পুরস্কারটি পেলে আমার ২১ বছরের অপেক্ষার অবসান হতো।

শিক্ষক এম এ রশিদ ভুইয়া ১৯৪১ সালে পাকুন্দিয়া উপজেলার নারান্দী ইউনিয়নের আগরপাট্্রা গ্রামের প্রয়াত মোহাম্মদ আলী ভুইয়া ও মরহুমা আয়শা খাতুনের পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৬১ সালে চরদেও কান্দী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৯৮ সালের ৩১ আগস্ট আগরপাট্্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করে অবসর নেন।

তিনি জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব সুনামের সাথে পালন করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি সাংবাদিকতাও করেছেন। ১৯৫৫ সালের অর্ধ সাপ্তাহিক পাকিস্তান পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন।

এছাড়াও দৈনিক নাজাত (১৯৫৮), দৈনিক পয়গাম (১৯৬৫), দৈনিক আজাদ (১৯৭০) বাংলা বাজার (১৯৭১) থানা ও মহকুমা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন।

১৯৯৪ সালে কিশোরগঞ্জ থেকে প্রকাশিত কাজী শাহীন খান সস্পাদিত জেলার প্রথম দৈনিক আজকের দেশ-এ স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে শুরু থেকে অদ্যবধি কাজ করছেন।

১৯৬৬ সালে কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাব গঠনকালে তিনি প্রতিষ্ঠাতা সহ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ফলে ২০১৭ সালে কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে তৎকালীন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের উপস্থিতিতে তাঁকে সম্মাননা ও ক্রেস্ট দেয়া হয়।

ঢাকাটাইমস/২৬জুন/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :