খুনের দৃশ্য দেখেও নির্লিপ্ততায় মর্মাহত উচ্চ আদালত

প্রকাশ | ২৭ জুন ২০১৯, ১৩:৩৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বরগুনায় চোখের সামনে কুপিয়ে হত্যা হলেও প্রত্যক্ষদর্শীদের নির্লিপ্ততায় মর্মাহত উচ্চ আদালত। হাইকোর্ট মনে করে পাঁচ জনও যদি এগিয়ে আসত, তাহলে খুনিরা আর সাহস পেত না।

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফ নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে কয়েকজন দুর্বৃত্ত। এ সময় তার স্ত্রী আয়শা আক্তার মিন্নি আপ্রাণ চেষ্টা করেন রিফাতকে বাঁচাতে। ঘটনাটি দেখেও আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের কেউ এগিয়ে আসেনি। তারা ঘটনাটির ছবি আর ভিডিও ধারণে ব্যস্ত ছিল। কেউ কেউ মোবাইল ফোনে কথাও বলছিলেন। কেউ কেউ তাকিয়ে তাকিয়ে পুরো খুনের দৃশ্য দেখে এলাকা ছাড়েন। খুনিরাও নির্বিঘ্নে ছাড়ে এলাকা।

বৃহস্পতিবার ঘটনাটি হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস। আর বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের বেলা দুইটার মধ্যে এই ঘটনায় পুলিশের ব্যবস্থা জানতে চান রাষ্ট্রপক্ষের কাছে।

দুই বিচারক তাদের আদেশে প্রত্যক্ষদর্শীদের নির্লিপ্ততায়ে হতাশার কথাও জানান। বলেন, ‘সারা দেশের সবাই এই ঘটনায় মর্মাহত। সমাজটা কোথায় যাচ্ছে? প্রকাশ্য রাস্তায় মানুষটাকে মারলো। একজন ছাড়া কেউ এগিয়ে আসলো না!

‘জনগণকে আপনি কী করবেন? বাংলাদেশের পরিস্থিতি এমন ছিল না। ভিডিও করল, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসল না! এটি জনগণের ব্যর্থতা।’ 

রিফাত হত্যার ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে। ভাইরালও হয়ে গেছে সেটি। আর ফেসবুকেও তীব্র সমালোচনা হচ্ছে প্রত্যক্ষদর্শীদের এই নির্লিপ্ততার।

বিচারক বলেন, ‘দাঁড়িয়ে দেখেছে, কেউ প্রতিবাদ করল না! পাঁচজন মানুষ অন্তত এগিয়ে আসলে হয়তো তারা সাহস পেত না। হয়তো তারা (দুর্বৃত্তরা) ক্ষমতাবান, হয়তো মানুষ ভয়ে এগিয়ে আসেনি।’

এটি সামাজিক অবক্ষয়ের ফসল বলেও মনে করে হাইকোর্ট। বিচারক প্রশ্ন করেন, ‘এই সামাজিক সচেতনতা তৈরি করবে কে?’

এই ঘটনায় পুলিশ এরই মধ্যে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। তার নাম চন্দন। তবে প্রধান সন্দেহভাজন নয়ন বন্ড, তার বন্ধু নিশান ফরাজি ও রাব্বি আকন এখনো লাপাত্তা। তাদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ভিডিও ফুটেজ থেকে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করার বিষয়টিও জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ঢাকাটাইমস/২৭জুন/ডব্লিউবি