ফরিদপুরে পাটক্ষেতে পোকার আক্রমণ, হতাশ চাষি

ফরিদপুর প্রতিনিধি
 | প্রকাশিত : ৩০ জুন ২০১৯, ০৮:৪৪

ফরিদপুরে ছ্যাঙা ও তৃণভোজী পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পাট ক্ষেত। ফলে কৃষকদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে চরম হতাশার।

কৃষকরা জানান, গত ১০ বছরের মধ্যে পাটে এভাবে পোকার আক্রমণ ঘটেনি। এর সত্যতা স্বীকার করেছে ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরও। চলতি মৌসুমে ফরিদপুর পাটের চাষ হয়েছে হাজার ৯২৫ হেক্টর জমিতে।

পাট উৎপাদনের দিক থেকে দেশে ফরিদপুরের স্থান এক নম্বরে। ফরিদপুরে উন্নতজাতের পাট উৎপন্ন হয় বলে এ জেলাকে ‘পাটের রাজধানী’ও বলা হয়। কিন্তু পোকার আক্রমণে পাটের ডগা ঝরে পড়ায় চাষিদের মনে নেমে এসেছে গভীর হতাশা।

পাট উৎপাদনের দিক থেকে ফরিদপুরের সালথা ও নগরকান্দা উপজেলা অগ্রগামী। ওই দুই উপজেলার মধ্যে সালথায় পোকার আক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আক্রান্ত হয়েছে নগনরকান্দা ও বোয়ালমারী উপজেলার পাটক্ষেতও।

সালথার কয়েকজন পাট চাষির সাথে কথা বলে জানা গেছে, ছটকা পোকা পাটের বেশি ক্ষতি করছে। এই পোকা পাটের আগার পাতা খেয়ে ফেলছে। পাটের আগা ভেঙে পড়ছে। ফলে পাট বড় হচ্ছে না। কা- থেকে ছোট ছোট শাখা বের হচ্ছে। অপরদিকে বিছা পোকাও পাতের পাতা খেয়ে ফেলছে।

কৃষকরা আরও জানান, গত ১০ বছরে এ অঞ্চলে ছটকা ও ছ্যাঙার এমন ভয়াবহ আক্রমণ আর হয়নি। একরের পর একর জমির পাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত জমি থেকে পাট তুলে আষাঢ়ি ধান চাষ করছেন।

সালথার মাজারদিয়া ইউনিয়নের মুরাটিয়া গ্রামের পাট চাষি মোকাররম মোল্লার মোট কৃষি জমির পরিমাণ সাড়ে সাত একর। এর মধ্যে তিনি সাড়ে চার এক জমিতে পাট চাষ করেছেন। তিনি বলেন, এ এলাকায় সাধারণত দুটি ফসল হয় পেয়াজ ও পাট। এবছর পিয়াজ চাষ করে লোকসান হয়েছে। এক মণ পেয়াজ উৎপাদন খরচ পড়েছে ৯০০ টাকা, অথচ তাদের পিয়াজ সর্বোচ্চ বিক্রি করতে হয়েছে ৭০০ টাকা মণ। শুরুতে ২০০ টাকা মণ হলেও পেয়াজ বিক্রি করতে হয়েছে।

তিনি বলেন, পাট ক্ষেত পোকার আক্রমণে উজার হয়ে যাচ্ছে। ঘরে টাকা নেই। এই ভরা আমের মৌসুমে নাতি-নাতনিদের জন্য বাজার থেকে আম কিনতেও পারছে না।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রদারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবছর এ জেলায় মোট ৮২ হাজার ৯২৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩০ হেক্টর জমিতে মেস্তা জাতের এবং বাকি ৮২ হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমিতে তোষা জাতের পাট বপন কতরা হয়েছে। গত বছর ফরিদপুরে পাট চাষ করা হয়েছিল ৮২ হাজার ৬৯০ হেক্টর জমিতে। গতবারের তুলনায় চলতি বছর ২৩৫ হেক্টর জমিতে বেশি পাট বপন করা হয়েছে।

ফরিদপুর অঞ্চলে পাটে ব্যাপক হারে ছটকা ও বিছা পোকার আক্রমণের কথা স্বীকার করেছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্ত্তী।

কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্ত্তী বলেন, বৃষ্টি হলে বিছা পোকা ঝড়ে পড়বে। আর ছটকা পোকার জন্য কেরসিন দড়ি ভিজিয়ে সে দড়ি পাটক্ষেতের উপর দিয়ে টেনে নিয়ে গেলে এ পোকার হাত থেকে রক্ষা পাওযা সম্ভব।

(ঢাকাটাইমস/৩০জুন/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :