কার স্বার্থে রামদা হাতে নিলে?

মো. তারেক রহমান
 | প্রকাশিত : ০৪ জুলাই ২০১৯, ২১:৩৯

এই যে এখানে ছবিতে যাদের দেখছেন এদের অনেকেই কেবল একাদশ শ্রেণি পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রেখেছে। কদিন আগেও বাবা মায়ের বাধ্যানুগত সন্তান ছিল এরা। উচ্চ শিক্ষার জন্য আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণ্ডিতে এসেছে। ঘটনা যা ঘটেছে তা খুব স্বাভাবিক, মিষ্টি খাওয়াকে কেন্দ্র করে।

আমি বলি কি, মিষ্টি খাওয়াকে কেন্দ্র করে, খেলাধুলাকে কেন্দ্র করে, বান্ধবীকে নিয়ে ঝগড়া হতেই পারে। হয়েও আসছে বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ। কিন্তু এদের হাতে এই যে ভয়ঙ্কর যত সব খেলনা এসব কেন, কে দিল এসব খেলনা, কী স্বার্থে দিল এসব খেলনা। হে যুবকরা তোমরা কি কখনো ভেবেছো এই খেলনাগুলো কেন তোমাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে?

মিষ্টি খাওয়ার সময় ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই হলের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যপক সংঘর্ষ ও গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আহত হয়েছেন সহকারী প্রক্টর ও এক অধ্যাপকসহ অন্তত ৫০ জন।

বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে বটতলায় মওলানা ভাসানী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হলের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এই যে তুমি একটা বড় ছোড়া হাতে নিয়ে আছো, এই যে আর এক যুবক তুমি যে রামদা ধরে আছো, এই যে লম্বা করে যুবকটা তুমি যে লাঠিটা ধর আছো তা দিয়ে কি করবে? আমি অবশ্যই আশা করি না তুমি এটা দিয়ে কাউকে আঘাত করো বা জখম করো। কিন্তু একবার কি ভেবেছে তুমি যে উদ্যেশ্যে এই অস্ত্রগুলো ধরে আছো, তা দিয়ে যাকে মারবে তাকে হয়ত তুমি ভালো করে চেন না, কোন দিন কথাও হয়নি তোমার, তুমি যাকে মারতে যাচ্ছ তার সাথে কি কোন শত্রুতা ছিল? ভেবেছো একবার, তাহলে তাকে মারবে কেন?

দেখো, যে তোমার হাতে এই রামদা, চাপাতি, পিস্তল তুলে দিল তাকে একবার চেনার চেষ্টা করো। একবার ভাবো, সে কি কখনোই চাইবে তুমি তার মত নেতা হও? তুমি যদি তার মাপের কাছাকাছিও যাও সে তোমায় ছেঁটে ফেলার চেষ্টা করবে। আর সেদিন তোমায় ছেঁটে ফেলতে তোমার মতই কাউকে ব্যবহার করবে।

ঠিক এভাবেই আমাদের এক ভাইকে আর এক ভাইয়ের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিচ্ছে তারা, এক বাবার সন্তানকে আর এক বাবার সন্তানকে হত্যা করতে ব্যবহার করছে তারা। অথচ এই লোকগুলো দেখো, নিজেদের কোনই শক্তি নাই। এমনকি এরা নিজেদের সম্পদ নিজের সন্তান দিয়ে রক্ষা করার যোগ্যতা রাখে না, তাইতো এরা নিজেদের সন্তানকে ইউরোপ-আমেরিকায়, অস্ট্রেলিয়ায় পাঠিয়ে সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। অন্যদিকে তাদের অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ রক্ষায় তারা ব্যবহার করছে আমাদের কারো সন্তানকে।

এই যে তোমরা যারা অস্ত্রের রাজনীতিতে ঢুকে গর্বে বুক ফুলিয়ে চলছ তাদের একটা বার্তা দিতে চাই, যার শেল্টারে আজ অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করছ, সেই শেল্টার একদিন তোমার জীবনে সুখের কাঁটা হবে, তোমার ক্যারিয়ারের কাঁটা হবে, তোমার অনিদ্রার কারণ হবে, তোমার পরিবার আর সমাজ ধংসের কারণ হবে।

লেখক: যুগ্ম আহবায়ক, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :