পায়রায় কাজে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা

প্রকাশ | ০৪ জুলাই ২০১৯, ২৩:১৭

এস কে রঞ্জন, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) থেকে

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাংলাদেশি শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। এতে প্রকল্প এলাকায় কর্মমুখর হয়ে উঠেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চীনের শ্রমিকদের সাথে কাজ শুরু করেছেন ৩০৮ জন বাংলাদেশি শ্রমিক।

বিসিপিসিএল কর্তৃপক্ষ জানায়, বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় ১২টি ম্যান পাওয়ার এজেন্সিকে শ্রমিক সরবরাহের জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে। নর্থ ইস্ট (নম্বর-১) ইলেক্ট্রিক পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন লিমিটেড (এনইপিসি) কর্তৃপক্ষ পর্যায়ক্রমে আরও এজেন্সিকে শ্রমিক সরবরাহের অনুমতি দেবে। কাজে যোগ দেয়া শ্রমিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের অনুমতি দেয়া হয়েছে। 
বিসিপিসিএলের জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শাহ মনি জিকো জানান, এখন পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র চীনা ও বাঙালি শ্রমিকদের আগমনে প্রকল্প এলাকা কর্মমুখর হয়ে উঠেছে। 

নির্বাহী প্রকৌশলী জনাব রেজওয়ান ইকবাল খান জানান, "বাংলাদেশি শ্রমিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে তা নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হচ্ছে। যাতে কেউ ভুয়া পরিচয়পত্র দিয়ে যাতে কাজ করতে না পারে। এতগুলো শ্রমিকের পরিচয়পত্র যাচাই বাছাই করা যেহেতু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই আমাদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নির্বাচিত কিছু সংখ্যক শ্রমিকদেরকে আজ কাজে যোগদান করানো হয়েছে।

৩০৮ জন বাংলাদেশি শ্রমিক পূর্বের মত সেফটি ড্রিল প্রশিক্ষণ শেষে চাইনিজদের সাথে একযোগে কাজ শুরু করেছেন।

গত ১৮ জুন পায়রা ১৩২০ মেঘাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে এক বাংলাদেশি শ্রমিক নিহতের ঘটনায় সৃষ্ট সংঘর্ষে মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হয়ে এক চায়না প্রকৌশলী মারা যান। এ ঘটনার পর থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাঙালি শ্রমিকদের ১৫দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়। 

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কাজ করছে ম্যান পাওয়ার এজেন্সির কিছু কর্মকর্তা, রোহিঙ্গা শ্রমিকদেরও এখানে কাজের সুযোগ করে দিয়েছিলেন। ব্যক্তি লাভবান হতে তারা এ কাজ করলেও বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যত কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এমনকি যে দোভাষীরা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চায়না ও বাঙালি শ্রমিকদের মধ্যে ভাষা ও তথ্য আদান প্রদানের কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধেও কোন প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

সূত্র জানায়, মূলত দোভাষীরা বাঙালি শ্রমিকদের কোণঠাষা করে রাখায় অনেক শ্রমিক সঠিক কাজ করলেও চায়না শ্রমিক ও প্রকৌশলীদের ভুল তথ্য দেয়ায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে একাধিক অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। বাঙালি শ্রমিকরা নিগৃহীত হলেও ম্যান পাওয়ার এজেন্সির মালিক ও দোভাষীরা কাজ থেকে তাড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে তাদের দমন করে রাখছে।

প্রকল্প পরিচালক শাহ্ আবদুল মওলা বলেন, আমরা আশা করছি অন্যান্য শ্রমিকরাও খুব দ্রুতই কাজে যোগদান করবে। তবে শ্রমিকদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স থাকাটা বাধ্যতামূলক।

ঢাকাটাইমস/০৪জুলাই/ইএস