দেশের প্রথম সিভিক সেন্টার হচ্ছে খুলনায়
প্রকাশ | ০৫ জুলাই ২০১৯, ২০:২০ | আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৯, ২০:৩১
দেশের প্রথম সমন্বিত নাগরিক সুবিধা নিয়ে একটি সিভিক সেন্টার হচ্ছে খুলনায়। শেখ রাসেল সিভিক সেন্টার নামের এ প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। মূল্যায়নের পরে প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) উত্থাপন করা হবে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ কোটি টাকা। একনেকের অনুমোদন পেলে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) এ সিভিক সেন্টারটি নির্মাণকাজ শুরু করবে।
মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, খুলনায় দেশের প্রথম কোনোও সিটি কর্পোরেশন এ ধরনের সিভিক সেন্টার নির্মাণ করতে যাচ্ছে। এটি নির্মাণের জন্য খুলনা মহানগরীর নতুন রাস্তা মোড়কে বাছাই করা হয়েছে। এ সিভিক সেন্টারে থাকবে অত্যাধুনিক ক্লাব, সেমিনার হল, গেস্ট হাউস, সুইমিং পুল, টেনিসকোর্টসহ বিভিন্ন সুবিধা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, এ প্রকল্পটি সম্প্রতি প্রি-একনেকের সভায় কিছু সংশোধনী দেয়া হয়। তা সংশোধন করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪১ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)।
খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির মহাসচিব আশরাফ উজ জামান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘শুধু শহরে হাইরাইজ বিল্ডিং থাকলেই হবে না। আধুনিক নগর সভ্যতা প্রতিষ্ঠায় যে সমস্থ সুযোগ থাকে সেটা খুলনায় নেই। খুলনা শহরে দুটি পার্ক আছে। কিন্তু যে মানের হওয়া দরকার সে মানের নেই।’ তিনি বলেণ, ‘খুলনা শহরে ৩০০ লোক নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য ভালো হলো নেই। তাই যত দ্রুত সম্ভব শেখ রাসেল সিভিক সেন্টার প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন। খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনেক আগের পরিকল্পনা এটা। এই প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে চিত্তবিনোদনের পাশাপাশি এলাকাবাসীর নাগরিক চাহিদা পূরণেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।’
সিভিক সেন্টার শহরের এমন একটি অংশ যেখানে একটি শহরের সমগ্র কার্জক্রমগুলো ছোট পরিসরে এবং সুসজ্জিতভাবে সন্নিবেশিত থাকে। যেখানে অধিকাংশ লোকের সমাগম হয় এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। সিভিক সেন্টার একটি শহরের বিনোদন এবং সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু। সিভিক সেন্টার শহরের অধিবাসীদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, আধ্যাত্মিক, ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মানুষের মনের চাহিদা পরিপূর্ণ হয়।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র থেকে জানা গেছে, প্রকল্পটি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে প্রস্তুত করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। আগামী ১৫ জুলাই এ বিষয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেই সভায় প্রকল্পটির নানা দিক মূল্যায়ন করে ছাড়পত্র দেওয়া হতে পারে। পরে প্রকল্পটি পরিকল্পনা মন্ত্রীর দপ্তরে পাঠালে মন্ত্রী একনেক সভায় উপস্থাপন করবেন। প্রকল্পটির সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকের সভায় অনুমোদন দেয়া হতে পারে।
গৃহায়ন ও গনপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে শেখ রাসেল সিভিক সেন্টার নির্মাণের জন্য মোট ১৪১ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এই টাকার পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে করা হবে বলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র থেকে জানা গেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়েছে জুলাই ২০১৯ থেকে ডিসেম্বর ২০২২ সাল পর্যন্ত।
প্রকল্পটির মূল কার্জক্রমের কার্যক্রমের অংশ হিসাবে সেখানে তিনটি কনফারেন্স রুম ছাড়াও একটি করে মাল্টিপারপাস হল,অডিটরিয়াম, জিমনেশিয়াম, রেস্টুরেন্ট, অথিতিশালা, ক্লাব হাউস, এম্পিথিয়েটার, টেনিস কোর্ট, স্যুভেনির সপ স্থাপন করা করা হবে। সেইসঙ্গে ৭৯৩ দশমিক ৯১ বর্গমিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও ওয়াকওয়ে নির্মান, ১০৭১ দশমিক ১০ বর্গমিটার অভ্যন্তরীণ ড্রেন ও এপ্রোন নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করা হবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, শেখ রাসেল সিভিক সেন্টার নির্মাণ প্রকল্পটি খুলনা শহরের কেন্দ্রস্থল হতে ৬ কিলোমিটার দূরের খালিশপুর, দৌলতপুর, পাবলা ও দেয়ানার মধ্যবর্তী কেডিএ আউটার বাইপাস রোড সংলগ্ন কবির বটতলা এলাকার ১ দশমিক ৪৪ একর জমিতে স্থাপন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্পের সামনের দিকে ১০০ ফুট প্রসস্থ কেডিএ আউটার বাইপাস রোড বিদ্যমান রয়েছে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে খালিশপুর, দৌলতপুর, পাবলা ও দেয়ানা এলাকার প্রায় ৫ লাখ মানুষের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, আধ্যাত্মিক, ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানসহ সেমিনার-সিমপোজিয়াম ও সম্মেলনের আয়োজন করা সম্ভব হবে। ফলে ওই এলাকার জনসাধারণের সামাজক-সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড প্রসারের পাশাপাশি এলাকাবাসীর চিত্তবিনোদন এবং নাগরিক চাহিদা পূরণ হবে।
(ঢাকাটাইমস/৫জুলাই/জেআর/ডিএম)