কুষ্টিয়ায় বিনা ঘুষে ৭৫ জনের চাকরি হলো পুলিশে

প্রকাশ | ০৫ জুলাই ২০১৯, ২০:৫৯

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

‘লাখ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে আর মামা-খালুর জোর না থাকলে পুলিশে চাকরি পাওয়া যায় না’ এমন কথা লোকমুখেই প্রচলিত। তবে এবারে তার সম্পূর্ণ ব্যাতিক্রম। মেধা ও যোগ্যতারভিত্তিতে কুষ্টিয়ায় পুলিশ কনস্টেবল পদে ৭৫ জনের চাকরি দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। তবে একেবারে বিনে পয়সায় ঠিক নয়, ১০৩ টাকায়। পুলিশের এমন প্রচারণা কিংবা এমন ঘোষণা একজন মিডিয়াকর্মী হিসেবে বিশ্বাস করা কঠিন। কারণ এটি অসম্ভব প্রক্রিয়া। বিগত নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তার দৃষ্টান্ত।

মাত্র দুদিনেই যাচাই-বাছাই শেষে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত তার কার্যালয়ের সামনে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা দেন।

প্রাথমিকভাবে দুই সহস্রাধিক চাকরি প্রত্যাশী অংশ নিলেও লিখিত পরীক্ষায় টিকে মাত্র ৩০০ জন। এর মধ্য থেকে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে সম্পূর্ণ মেধারভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হয় ৭৫ জনের নাম। স্থান পায় সাত নারীও।

সাত নারীর মধ্যে দৌলতপুর উপজেলার শেরপুর গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান সোনিয়া আক্তার। বাবা দিদার আলীর অস্বচ্ছল পরিবারের সন্তান তিনি। চার ভাই-বোনের মধ্যে সোনিয়া সবার ছোট। অভাবের সংসারের হাল ধরার মত কেউ নেই। বাবা দিদার আলী দরিদ্র কৃষক। তার পক্ষে বড় এই সংসার চালানো দায়। ছোট বেলা থেকেই পুলিশে চাকরি করার ইচ্ছে ছিল সোনিয়ার। কিন্তু অভাবের সংসারে ঘুষ দিয়ে চাকরি নেয়ার সেই সামর্থও নেই তার। এবার তিনি শুনেছেন চাকরিতে কোন ঘুষ লাগবে না। পুলিশের এমন প্রচারণায় আবেদন করেছিলেন তিনি। পরিবারের পক্ষ থেকেও উদ্বুদ্ধ করা হয় তাকে। শরীরিক ফিটনেস কিংবা মেধা দুটিই ছিল তার। তাই আত্মবিশ্বাসও ছিল বেশ। মাত্র ১০৩ টাকায় হয়েও গেল চাকরি।

পুলিশ সুপার জানান, চাকরি পাওয়া ছেলে-মেয়েদের অভিব্যক্তি শুনে আমি বিমোহিত হয়েছি। যারা চাকরি পেয়েছে তাদের অধিকাংশই হতদরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান। প্রকৃত মেধাবীরাই সুযোগ পেয়েছে চাকরিতে।

তিনি বলেন, ‘সরকারসহ পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্তাব্যক্তিরা চাচ্ছেন পুলিশে স্বচ্ছতা ফিরে আসুক। সেই চাওয়া পুরনেই কুষ্টিয়া পুলিশ নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার সাথে বাস্তবায়ন করেছে। এই ধারা আগামীতেও অব্যাহত রাখতে চাই।’

(ঢাকাটাইমস/৫জুলাই/এলএ)