ভুল চিকিৎসায় ব্যবসায়ীর মৃত্যু, পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৫ জুলাই ২০১৯, ২১:৩৩

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভুল চিকিৎসায় পোল্ট্রি ব্যবসায়ী জুয়েল মিয়া নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার চন্ডিবের মধ্যপাড়া এলাকার হাজী আলাউদ্দিনের ছোট ছেলে। এ ঘটনায় জুয়েল মিয়ার বড় ভাই কামাল মিয়া বাদী হয়ে ট্রমা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পিজিটি অর্থপেডিক সার্জারি ডা.কামরুজ্জামান আজাদকে প্রধান আসামি করে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে শুক্রবার সকালে মামলা করেছেন।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টায় ভৈরবের স্থানীয় ট্রমা জেনারেল হাসপাতালে ভুল এনেসথিয়া দেয়ায় অপারেশন টেবিলেই রোগীর মৃত্যুর ঘটে। এ ঘটনার খবর পেয়ে রোগীর স্বজনসহ স্থানীয় এলাকাবাসী হাসপাতাল ভাঙচুরসহ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. কামরুজ্জামান আজাদ ও হাসপাতাল মালিক মোশারফ হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশ, র‌্যাব এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় খবর পেয়ে ছুটে আসেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)আনিসুজ্জামান।

রোগীর স্বজনদের দাবি, ডা. ইমরান অপারেশনের সময় এনেস্থিসিয়া দিতে ভুল করেছে। এছাড়াও এনেস্থিসিয়া করার পূর্বে কোন রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই রোগীকে ভুল ওষুধ প্রয়োগ করার কারণে অপারেশন থিয়েটারে রোগীর মৃত্যু হয়।

রোগীর বড় ভাই মাল মিয়া জানান, আমার ছোট ভাই জুয়েল দুই বছর পূর্বে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে তার হাতের কবজি ভেঙে যায়। তার চিকিৎসার জন্য আহত অবস্থায় ভৈরব ট্রমা হাসপাতালে এক লাখ টাকার বিনিময়ে ভাঙা হাতের চিকিৎসা করানো হয়। সে সময় হাতের কবজিতে বড় একটি অপারেশন মাধ্যমে তার হাতে স্ক্রুসহ দুটি প্লেট প্রবেশ করায় চিকিৎসক ডা. কামরুজ্জামান আজাদ। দুই বছর পর সে স্ক্রু ও প্লেট অপসারণের জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটায় হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. কামরুজ্জামান আজাদ অপারেশনের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। হঠাৎ রাত সাড়ে নয়টার দিকে ওটি থেকে চিকিৎসক বের হয়ে বলেন, আপনাদের রোগীটা একটু শ্বাস কষ্টে সমস্যা দেখা দিছে তাকে জরুরি ঢাকাতে আইসিওতে নিতে হবে এ কথা বলে তিনি আবার ওটিতে চলে যান। আমি ওটিতে গিয়ে দেখি আমার ভাই টেবিলেই মারা গেছেন। ভুল ওষুধ দিয়ে তার ভাইকে মেরেছে বলে তার অভিযোগ।

অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা.কামরুজ্জামান আজাদ জানান, সম্পূর্ণ অজ্ঞানে ঝুঁকি থাকায় রোগী জুয়েল মিয়াকে অপারেশনের সময় সম্পূর্ণ অজ্ঞান না করে রোগীর একটি পাশ অজ্ঞান করে অপারেশন করা হয়। রোগীর আবদার ছিল সে জন্য কোন রকম টের বা খবর না পায় সেজন্য ঘুম পারাতে বলে। তার অনুরোধে অজ্ঞান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ইমরান তাকে ঘুমের ওষধ দেন। এর ২০-২৫ মিনিটের মধ্য তার হাত থেকে সার্জারির মাধ্যমে স্ক্রুসহ দুটি প্লেট অপসারণ করা হয়। তারপর যখন অপারেশন শেষ করার সময় হঠাৎ করে রোগীর পেশার কমে যায় এবং তার হৃদপিন্ডের স্বাভাবিক চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তার পরক্ষণেই রোগী মৃত্যুবরণ করেন। রোগীর ভয়ের কারণেই এমনটা হয়েছে বলে তিনি জানান।

ভৈরব থানার ওসি মোখলেছুর রহমান জানান, হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে নিহতের বড় ভাই কামাল মিয়া বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। এ মামলার প্রধান আসামি চিকিৎসক ডা. কামরুজ্জামান আজাদকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৫জুলাই/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :