ঠাকুরগাঁওয়ে আমের বাজারে ক্রেতা নেই

বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও
 | প্রকাশিত : ০৬ জুলাই ২০১৯, ০৮:৩১

সূর্যপুরী আমের জন্য বিখ্যাত ঠাকুরগাঁও জেলায় বাজারে ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে সাধারণ ব্যবসায়ীরা হতাশায় ভুগছেন। তবে মোকামে আমের দাম বেশি বলে বিভিন্ন স্তরের বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তাদের মধ্যে বাগান ক্রেতারা আমের দাম বেশি বলে লাভের আশা করছেন।

ঠাকুরগাঁওয়ের বাজারে বর্তমানে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে আম। তবে বাগান এলাকায় দাম আরো কম।

ঠাকুরগাঁও কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁওয়ে সূর্যপুরী আমের বাগান রয়েছে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৫০০টি। ২ হাজার ৮৮৭ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। এসব বাগান থেকে এবার কমপক্ষে ৩০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছে।

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য আমবাগান। এসব বাগানের বেশির ভাগ সূর্যপুরী জাতের আমের। খেতে সুস্বাদু, সুগন্ধীযুক্ত, রসালো আর ছোট আঁটি এই জাতের অন্যতম বৈশিষ্ট্যি। সূর্যপুরীর পাশাপাশি আ¤্রপালি, ফজলি, নাংড়া, বারি-৪ জাতের আম উৎপাদন হয়ে থাকে এখানে।

জেলার সবচেয়ে বড় ফলের মোকাম ঠাকুরগাঁওয়ের রোড বাজারে বিপুল আমের আমদানি হতে দেখা যায়। কিন্তু তুলনায় ক্রেতা নেই বললেই চলে। প্রতি কেজি সূর্যপুরী আম ৩৫-৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য বছর এখান থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আম পাঠানো হলেও এবার এখন পর্যন্ত আমের চাহিদা তেমন লক্ষ করা যাচ্ছে না।

ব্যবসায়ীরা জানান, এ বছর আমের উৎপাদন কম হওয়ায় দাম একটু বেশি। তাই ক্রেতার দেখা মিলছে কম। এ মোকামে প্রায় দেড় শ দোকান রয়েছে। বেশির ভাগ ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে মোকাম শুরু করেছেন। বেচাকেনা না জমায় পুঁজি হারানোর আশঙ্কা করছেন তারা।

বালিয়াডাঙ্গী এলাকার এস এম মশিউর রহমান নামের একজন বাগানমালিক জানান, ‘গত বছর আমের ব্যাপক ফলন হওয়ায় দামের বিপর্যয় ঘটে। সেজন্য আমরা বাগানমালিকরা সারা বছর পরিচর্যার খরচও তুলতে পারিনি।’

একটি বাগান ৬ লাখ টাকায় কিনেছিলেন বাগান ক্রেতা শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘পরিচর্যাসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় হয়েছে আরো তিন লাখ টাকা। সব মিলে বাগানের দাম পড়েছে ৯ লাখ টাকা। এবার আমের দাম তুলনামূলক বেশি থাকায় লাভের আশা করছি।’

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক আফতাব হোসেন বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলার মাটি তুলনামূলক উঁচু হওয়ায় ধান, গম, পাট, আলুসহ বিভিন্ন ফসলের পাশাপাশি ফলের উৎপাদনও ভালো হয়ে থাকে। ছোট-বড় মিলে প্রায় আড়াই হাজারের বেশি হেক্টর জমিতে ফলের চাষ হয়ে থাকে। গত বছরের তুলনায় এবার আমের ফলন কম হলেও দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা সেটি পুষিয়ে নিতে পারছেন।

এ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ধানের জমিতে আমের বাগান গড়ে উঠেছে। ফলে ধান ও গমের পাশাপাশি ফল বিক্রির নগদ অর্থ হাতে পাচ্ছেন মানুষ। এটা কৃষকদের কাছে অতিরিক্ত আয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে বলে জানান উপপরিচালক আফতাব হোসেন।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় সূর্যপুরী আমগাছ অবস্থিত। এটির বয়স কমপক্ষে ২০০ বছর। বিশাল আকৃতির আমগাছটি দাঁড়িয়ে আছে প্রায় দুই বিঘা জমির ওপর। মোটা মোটা ডালপালা বড় হয়ে অক্টোপাসের মতো মাটি আঁকড়ে ধরেছে। বয়সের ভারে গাছের ডালপালা নুয়ে পড়লেও গাছটির শীর্ষভাগে সবুজের সমারোহ। এ গাছের চারা থেকে সারা উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে সুর্যপুরী জাতের আমবাগান।

(ঢাকাটাইমস/০৬জুলাই/মোআ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :