বদলাতে হলে আমাদের জমিদারি ভাব কমাতে হবে

প্রকাশ | ০৭ জুলাই ২০১৯, ১২:২৮

মুশফিক ওয়াদুদ

কিছু দিন পরপর সিঙ্গাপুর, লস অ্যাঞ্জেলেস, নিউইয়‌র্ক আর উন্নত দেশের বিভিন্ন শহরের সাথে আমাদের রাজনীতিবিদদের তুলনা দেয়া দেখে বোঝা যায় যে, আমরাও এঁদের মতো হতে চাই। এটা ভালো। কিন্তু এ চাওয়াটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত। আমরা নিজেদের শহর অথবা দেশকে তাদের মতো অবকাঠামোগত উন্নত করতে চাই। আচরণগতভাবে নিজেদের পরিব‌র্তন কখনো করতে চাই না।

আচরণগত সবচেয়ে বড় পরিব‌র্তনটি হতে পারে আমাদের জমিদারি ভাব কমানো। অফিস-আদালত এবং বাসা-বাড়িতে সাপো‌র্ট স্টাফ আর গৃহপরিচারিকার ওপর নি‌র্ভরশীলতা কমানো। আমি এখন যে অফিসে ইন্টা‌র্নশিপ করছি অন্তর ৩০টি দেশে তার অফিস আছে। ডিসি এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ খানেক ক‌র্মী আছে। আমাদের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরকে সকালে দেখি নিজের কফিটা নিজেই ক্যাফেটারিয়া থেকে নিয়ে যান। দুপুরের খাবার পর নিজের টিফিন বক্সটি নিজেই ধুয়ে নিয়ে যান।

পশ্চিমা দেশগুলোতে প্রেসিডেন্ট বা বড় সিইও না হলে সেই ধরনের কোনো সাপো‌র্ট স্টাফ থাকে না। নিজেই নিজের কাজ করে থাকেন। আর আমাদের দেশে সরকারি অফিসগুলোতে উপজেলা পর্যায়ের কোনো ক‌র্মক‌র্তারও চার/পাঁচজন সাপো‌র্ট স্টাফ থাকে। বেসরকারি অফিসগুলোও কম যায় না।

বেসরকারি সেক্টরে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি অনেকেই নিজের কাজ নিজে করতে পারেন না। অন্যে নিজের কাজ করে দেওয়া অনেকটা স্ট্যাটাসের বিষয়। নিজের কাজ নিজে করলে সম্মান থাকে না। আর এই সাপো‌র্ট হিসেবে যারা কাজ করেন সমাজে তারা লো স্ট্যাটাস মেইটেইন করেন। সারা জীবন কাজ করে যান কিন্তু একই পদে অনেক সময় একই বেতনে।

সভ্য হতে চাইলে, উন্নত হতে চাইলে সবার আগে আমাদের এই সিস্টেম পরিব‌র্তন করতে হবে। তারপর অবকাঠামো উন্নত করার কথা ভাবতে পারি আমরা।

লেখক: আমেরিকা প্রবাসী সাংবাদিক