রিজার্ভ চুরির অর্থ ফেরত

ফিলিপাইনকে চাপ দেবে এপিজি

প্রকাশ | ০৭ জুলাই ২০১৯, ২০:১২ | আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৯, ২৩:১২

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি হওয়া রিজার্ভের অর্থ ফেরত দিতে ফিলিপাইনের ওপর চাপ সৃষ্টির আশ্বাস দিয়েছে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিং (এপিজি)। সংস্থাটি বলছে, ফিলিপাইন সদস্যদেশ হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এপিজি চাপ প্রয়োগ করতে পারে।

আজ রবিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এক বৈঠকে এই আশ্বাস দেয় এপিজি।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সভাপতিত্বে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে দিকনির্দেশনা এবং নীতিপ্রণয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় সমন্বয় কমিটির সঙ্গে এপিজির পরিচালক ডেভিট শ্যানন ও মোস্তফা আকবর বৈঠক করেন। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান প্রমুখ।

এপিজির মতে, ফিলিপাইনে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধের নিয়ম-কানুন পরিপালনে বেশ দুর্বলতা রয়েছে। এপিজির সদস্যদেশ হওয়ায় ফিলিপাইনের বিরুদ্ধে সংস্থাটি চাপ প্রয়োগ করতে পারে। তারা এ ব্যাপারে ফিলিপাইনের ওপর চাপ প্রয়োগ করবে। বাংলাদেশও এপিজির সংস্যদেশ।

রিজার্ভ চুরির অর্থ ফিলিপাইসন বাংলাদেশকে ফেরত দিচ্ছে না- এ বিষয়ে এপিজি কিছু বলেছে কি না জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান বলেন, ‘এটা নিয়েও তারা একটু আলাপ করেছেন। এপিজি বলছে, যেসব দেশে মানি লন্ডারিং বিষয়গুলো পুরোপুরি পরিপালন না হয় সেসব দেশে যেমন- ফিলিপাইন, এসব দেশে এগুলো বেশি হয়। সে দেশে যদি মানি লন্ডারিং বিষয়টা পরিপালন করা হতো তাহলে টাকাটা ব্যাংকের বাইরে যেত না।’

রিজার্ভের টাকা ফেরতের ব্যাপারে এপিজি দেখবে বলে জানান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান। তিনি বলেন, ‘এপিজির প্রতিটি সদ্যদেশের জন্য যে কমন ক্রাইটেরিয়া রয়েছে সেগুলো জাজ করতে গেলে তারা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ধরা পড়বে।’

সূত্র জানায়, চুরি হওয়া রিজার্ভের অর্থ ফেরত আনতে গত ১ ফেব্রয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে এ মামলা করা হয়। এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের জরুরি বোর্ড সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সুইফট সিস্টেমে ৭০টি ভুয়া পরিশোধ অর্ডার পাঠিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে মোট ১৯২ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার অবৈধভাবে নেয়ায় চেষ্টা করা হয়। এর মধ্যে একটি পরিশোধ অর্ডারে শ্রীলঙ্কায় দুই কোটি ডলার ও চারটি অর্ডারে আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের একটি শাখার ভুয়া গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট হয়ে জুয়ার বাজারে চলে যায়। শ্রীলঙ্কা থেকে ইতোমধ্যে চুরি হওয়া সব অর্থ ফেরত এসেছে। ফিলিপাইনে যাওয়া অর্থের মধ্যে এক কোটি ৫০ লাখ ডলার দেশটির কোর্টের আদেশে ফেরত আনা হয়েছে। বাকি ছয় কোটি ৬৪ লাখ ডলার অনাদায়ী রয়েছে, যা আরসিবিসির কাছ থেকে আইনি প্রক্রিয়ায় উদ্ধারের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

(ঢাকাটাইমস/৭জুলাই/মোআ)