অবশেষে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত হলো সাঁকোটি

মোহাম্মাদ মানিক হোসেন, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর)
| আপডেট : ০৮ জুলাই ২০১৯, ০৮:৩৪ | প্রকাশিত : ০৮ জুলাই ২০১৯, ০৮:৩৩

স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও ১০ গ্রামের মানুষের যাতায়াতে দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ইছামতি নদী পারাপারে সেতু নির্মাণ হয়নি। নির্বাচন এলে সবাই প্রতিশ্রুতি দেয়, কিন্তু কথা রাখে না। তাই এলাকাবাসী নিজেদের প্রয়োজনেই ঝড়ে ভেঙে যাওয়া সাঁকো নিজেদের স্বেচ্ছা শ্রমে পুনরায় নির্মাণ করেছে।

এ বছর বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই কালবৈশাখীর তা-বে হঠাৎ পুরোনো সাঁকোটি ভেঙে যায়। ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। চরম দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ। এবারো সরকারি কোনো সহায়তা না পাওয়ায় এলাকাবাসী বাঁশ, অর্থসহ শ্রম দিয়ে সাঁকোটি তৈরি করে। দুর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় গছাহার গ্রামের বাসিন্দাদের উদ্যোগে গত এক সপ্তাহ ধরে ওইস্থানে বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়।

চিরিরবন্দর উপজেলার রাণীরবন্দরে নশরতপুর ইউনিয়নের নশরতপুর ঈদগাহ্ মাঠ সংলগ্ন ইছামতি নদীর উপর গ্রামবাসীর উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে প্রায় ৭০ ফুট দীর্ঘ এ বাঁশের সাঁকোটি। ইছামতি নদীর ওপর সেতুর অভাবে দুই পাড়ের ১০ গ্রামের কৃষক তাদের ফসল উৎপাদন, ফসল ঘরে ও হাটবাজারে নিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন। ইছামতি নদীর পশ্চিমপারে নশরতপুর ইউনিয়ন ও উপজেলার প্রসিদ্ধ রাণীরবন্দরহাট। ওপারে আলোকডিহি, গছাহার, চকগোবিন্দ, দক্ষিণ পলাশবাড়ি, খানসামা উপজেলার দুবলিয়া, গোয়ালডিহি, লালদিঘী এবং নীলফামারী সদরের বড়–য়া গ্রাম।

সাঁকো তৈরি বাস্তবায়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছত্রধর দাস ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এখানকার সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় আমাদেরকে ৪/৫ কিলোমিটারের মতো এলাকা ঘুরে রাণীরবন্দরে যাতায়াত করতে হয়। অথচ সাঁকোটি তৈরি হলে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীসহ অসুস্থ মানুষ ও বৃদ্ধদের বেশি উপকার হবে।’

তিনি জানান, সাঁকোটি তৈরিতে বাঁশসহ অন্যান্য নির্মাণসামগ্রী কেনা ও শ্রমিকদের মজুরিসহ প্রায় দেড় লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এর মধ্যে চাইল্ড কেয়ার স্কুল কর্তৃপক্ষসহ স্থানীয় লোকজন আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছে। এছাড়া গ্রামের প্রতিটি পরিবার সাধ্যমতো সাঁকো তৈরির কাজে বিনা পয়সায় বাঁশ দিয়ে সহযোগিতা করেছে। বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে আটজন শ্রমিক বাঁশ সংগ্রহের কাজ করেন। সাঁকো তৈরিতে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা এ কাজের দেখভাল করেন।

সাঁকো তৈরির সময় নদীর পাড়ে ছিল গছাহার গ্রামের ও চাইল্ড কেয়ার স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র নাহিদ রানা সাগর। সে জানায়, নদীর পশ্চিমপাড়ে রাণীরবন্দর এন আই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ওয়েসিস স্কুল, চাইল্ড কেয়ার স্কুল, রাণীরবন্দরহাট, রাণীরবন্দর পোস্ট অফিস, রাণীরবন্দর মহিলা কলেজ, নশরতপুর রহমানিয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসা, রাণীরবন্দর দারুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসা ও রাণীরবন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। নদীর পূর্বপাড়ের বিভিন্ন গ্রামের ছেলেমেয়েরা এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে।

গছাহার গ্রামের গুয়াপাড়ার কৃষক রহমান ও জিয়ারুল ইসলাম বলেন, এখানে একটি সেতু নির্মিত হলে নদীর পূর্বপাড়ের লোকজনের দুর্ভোগ লাঘব হবে।

(ঢাকাটাইমস/০৮জুলাই/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :