জঙ্গি সংগঠনে টানতে প্রেম-বিয়ের ফাঁদ

প্রকাশ | ০৯ জুলাই ২০১৯, ২০:১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
গ্রেপ্তার আফজাল ও নাঈমা

সাফিয়া আক্তার তানজী। পড়াশোনা করতেন চট্টগ্রামের একটি কলেজে। এই তরুণীর সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় জান্নাতুল নাঈমা নামের এক নারীর। তিনিই সহিফুল সাইফ নামের এক তরুণের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন তানজীকে। সেখান থেকে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সাইফ ও তানজী।

২৬ জুন তানজী-সাইফ বিয়ে করবেন বলে চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে যান বরিশালে। সেখানে গিয়ে ঘটে বিপত্তি। তানজীকে বলা হয়, সাইফকে বিয়ে করতে হলে তাকে কোরআন হিফজ করতে হবে। এজন্য ভর্তি করানো হয় একটি মাদ্রাসায়। তারপরই তানজীকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করতে ট্রেনিং দেওয়া হয়।

তানজী নিখোঁজের পর অনুসন্ধানে নামে র‌্যাব। সোমবার রাতে বরিশালের একটি মাদ্রাসা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। এসময় আনসার আল ইসলামের সক্রিয় নারী সদস্য জান্নাতুল নাঈমা ও রাজধানীর ডেমরা থেকে আফজাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় উগ্রবাদী বই। আনসার আল ইসলাম নামের একটি জঙ্গি সংগঠন তরুণ-তরুণীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে জঙ্গিবাদে জড়াচ্ছে বলে তথ্য পেয়েছে র‌্যাব।

মঙ্গলবার বিকালে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যমে শাখার পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) লে. কর্নেল এমরানুল হাসান।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তরুণ-তরুণীকে প্রেম ও বিয়ের ফাঁদে ফেলে আনসার আল ইসলাম নামের জঙ্গি সংগঠনটি সদস্য বাড়াচ্ছে। কৌশলগতভাবে তারা নারী সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করছে। এলক্ষ্যে তারা দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই দলের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া জান্নাতুল নাঈমা জানিয়েছেন তিনি চট্টগ্রামের একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। ২০১৬ সালে ফেসবুকে একটি গ্রুপে যুক্ত হন তিনি। সেই গ্রুপের নারী সদস্যদের মাধ্যমে প্ররোচিত হয়ে আনসার আল ইসলাম নামের জঙ্গি সংগঠনের যোগ দেন। বর্তমানে তিনি এই সংগঠনের মহিলা সদস্য বৃদ্ধিতে দাওয়াতি কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন নারীকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করে তাদের দলে এনেছেন।

নাঈমা আরও জানিয়েছে, সাইফ তাদের দলেরই একজন সদস্য। সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তানজীকে মাদ্রাসায় কোরআন হিফজের জন্য ভর্তি করানো হয়। এজন্য মাদ্রাসার ভর্তি, থাকা খাওয়া, ভরণ-পোষণের দায়িত্ব দেওয়া হয় সাইফকে।

গ্রেপ্তার জঙ্গি সংগঠনের আরেক সদস্য আফজাল জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে আনসার আল ইসলামের সঙ্গে তিনি জড়িত। বর্তমানে রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় সংগঠনকে মজবুত করছেন। সংগঠনের নির্দেশনা অনুসারে মহিলা সদস্যদের দলে অন্তর্ভুক্তি ও তাদের দিয়ে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন। ধর্মভীরু ও সহজ-সরল নারীদের নাশকতা ও উগ্রবাদে তারা সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছেন।’

(ঢাকাটাইমস/০৯জুলাই/এসএস/জেবি)