প্রিক্স পিকটেট পুরস্কারের জন্য মনোনীত শহীদুল আলম

প্রকাশ | ০৯ জুলাই ২০১৯, ২১:০৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

অষ্টম প্রিক্স পিকটেট পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন বাংলাদেশের বিখ্যাত আলোকচিত্রশিল্পী শহীদুল আলম। চলতি বছরের ১৩ নভেম্বর এ পুরস্কারের বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে। পুরস্কার প্রদানের দিন লন্ডনের ভিক্টোরিয়া ও আলবার্ট জাদুঘরে সংক্ষিপ্ত তালিকার জন্য মনোনীত ১২ জনের বিভিন্ন ছবির প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।

শহীদুল আলম একজন আলোকচিত্রশিল্পী, লেখক, কিউরেটর ও সক্রিয় কর্মী হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত। তিনি গত বছর টাইম ম্যাগাজিনের টাইম বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

প্রিক্স পিকটেট পুরস্কারটি আন্তর্জাতিক টেকসই উন্নয়নে উদ্দেশ্যে দেয়া হয়। আলোকচিত্রের মাধ্যমে জনগণের সাথে টেকসই উন্নয়নের যোগাযোগের জন্য এ পুরস্কার পরিচিত। পুরস্কারের আর্থিক মূল্য বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭৭ লাখ।

চলতি বছরে পুরস্কারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘আশা’। শহীদুল আলমের সিরিজের শিরোনাম ‘এখনও সে হাঁসে-২০১৪’। এটি বাংলাদেশের যৌনকর্মীদের জীবনের আশার গল্প।

শহীদুল আলমের শিরোনামের মূল চরিত্র এক যৌনকর্মীর। তার নাম হাজেরা বেগম। সে শৈশবে অসংখ্যাবার গণধর্ষিত হয়। অবুঝ বয়সে বেত্রাঘাত, জোর করে পকেটমারের সাথে যুক্তসহ অপরিচিত এক নারীর কাছে বিক্রির মতো ঘটনার ভেতর দিয়ে বড় হয়েছে। তার জীবনে সুখের স্মৃতি নেই বললেই চলে। তা সত্ত্বেও হাজেরা বেগম খুশি। তবে যৌনকর্মী হওয়ার কারণে এক এনজিও কর্মী তাকে কাজে নেয়নি। মাঝে মাঝে ওই ঘটনা মনে হলে তার চোখের কোণে পানি চলে আসে।

শহীদুল আলমের সাথে তার ১৯৯৬ সালে ঢাকায় পরিচয়। তখন সে যৌনকর্মী ছিল। পরবর্তী সময়ে শহীদুল আলমের সাথে তার বন্ধুত্ব হয়েছিল। শহীদুল আলমের বাসায় হাজেরা বেগম ও তার অন্যান্য বন্ধুরা প্রায়ই আসে।

গল্পের উপস্থাপনায় শহীদুল আলম বলেন, বাংলাদেশে কারোর বাসায় যৌনকর্মীর আগমণ সামাজিকভাবে নিন্দনীয়। এ ধরনের ঘটনাকে অস্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখা হয়।

হাজেরা বেগম শহীদুল আলমকে তার আশার কথা জানায়। শহীদুল আলমের সাথে প্রায়ই রাস্তায় দেখা হয়। সে অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে আলমকে বলে, অন্য পুরুষরা তার মতো তাদের বোন বা বন্ধুর মতো আমাকে জড়িয়ে ধরে না। তারা আমার সাথে সহবাস করবে, সুযোগ পেলে আমাকে ধর্ষণ করবে কিন্তু আমার সাথে বোন ও বন্ধুর মতো আচরণ করবে না।

তার সন্তানরা একই যন্ত্রণা নিয়ে বেড়ে ওঠবে তা সে চাই না। সে আশা করে তার সন্তানরা সম্মানের সাথে বড় হবে। যেখানে তারা ঘৃণার পরিবর্তে ভালোবাসা পাবে।  

(ঢাকাটাইমস/০৯জুলাই/আরআর/জেবি)