বিপৎসীমা ছাড়িয়ে দুই কূল ভাসাল সুরমা

প্রকাশ | ১০ জুলাই ২০১৯, ১০:৪৪

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

চার দিনের টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বর্তমানে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে নদ-নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ভারতের মেঘালয়ে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ি ঢল অব্যাহত রয়েছে। এর পাশাপাশি ভারী বৃষ্টি হচ্ছে সুনামগঞ্জে। গত চার দিনের রেকর্ড বৃষ্টিতে সুরমা, যাদুকাটা, সোমেশ্বরী, খাসিয়ামারা, চেলাসহ বিভিন্ন সীমান্ত নদনদীর পানি বেড়েছে।

এর মধ্যে প্রধান নদী সুরমার পানি মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টায় সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে অনেক নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অনেক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে পানিতে ঢুকে গেছে। পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আরও অনেক নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭৫ সুনামগঞ্জে মিলিমিটার রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক ভূঁইয়া।

তিনি বলেন, প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে। রেকর্ড বৃষ্টিতে নদনদীর পানি বেড়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন নি¤œাঞ্চলের মানুষ। পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় নদী ও হাওরের পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলার বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার উপজেলার বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।

শক্তিয়ারখলা গ্রামের বাসিন্দা কামাল হোসেনসহ গ্রামটির বেশ কয়েকজন জানান, পাহাড়ি ঢলে তাহিরপুর-আনোয়রপুর, আনোয়ারপুর-বিশ্বম্ভরপুর সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রভাবিত হওয়ায় এই দুই উপজেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আছে।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানান, তাহিরপুর উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ তাহিরপুর-বাদাঘাট, বাদাঘাট-সোহালা, বাদাঘাট-টেকেরঘাট-বাগলী সড়কও ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এছাড়া তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের একাধিক স্থানে ভাঙন ও পানিতে ডুবে যাওয়ার ফলে জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ সাময়িক বন্ধ রয়েছে। এতে করে জনজীবনে এসেছে দুর্ভোগ। আমার উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেক্ষে সতর্ক অবস্থানে আছে সবাই।

বন্যা পরিস্থিতিতে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সকল উপজেলায় স্থানীয় পর্যায়ে উদ্ধার টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলায় তিন হাজার ৭৩৫ প্যাকেট শুকনা খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া জেলা ও উপজেলার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে থাকা ও সকল উপজেলায় মেডিকেল টিম গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ।

ঢাকাটাইমস/১০জুলাই/প্রতিনিধি/এমআর