গাফিলতিতে ট্রেন দুর্ঘটনা, সহকারী প্রকৌশলী বরখাস্ত

প্রকাশ | ১১ জুলাই ২০১৯, ১৯:৪০

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী

একজন সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলীর গাফিলতির কারণেই রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় তেলবাহী ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। প্রাথমিকভাবে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এমন তথ্যই পেয়েছে। এ নিয়ে আবদুর রশিদ নামে ওই সহকারী প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহীদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, যে এলাকায় ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছে সেখানকার লাইন সংস্কারের কাজ চলছিল। পুরাতন স্লিপার পরিবর্তন করে নতুন স্লিপার বসানো হচ্ছিল। নতুনভাবে দেয়া হচ্ছিল পাথরও।  কিন্তু যারা সংস্কার কাজ করেছেন তারা স্লিপারের সঙ্গে লাইন আটকানো কয়েকটি পিন (ডগস্পাইক) খুলে রেখেছিলেন। পাথর ফেলার কারণে সেটি ঢেকে যায়। এ কারণে সেটি কারও চোখে পড়েনি।’
সংস্কার কাজে নিয়োজিত সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রশিদও তা খেয়াল করেননি। ফলে পিন খোলা অবস্থায় লাইনের ওপর দিয়ে তেলবাহী ৩১টি বগি নিয়ে ট্রেনটি রাজশাহীর হরিয়ান যাচ্ছিল। তখনই দুর্ঘটনাটি ঘটে।

মহাব্যবস্থাপক জানান, ট্রেনের প্রতিটি বগিতে রয়েছে ৫০ হাজার লিটার তেল। প্রতি বগির ওজন ৫০ টন। পিন খোলা থাকায় অতিরিক্ত চাপে লাইন সরে যাওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
খোন্দকার শহীদুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনা তদন্তে বিভাগীয় ট্রান্সপোর্ট অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে এই কমিটিকে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চারঘাট উপজেলার হলিদাগাছির দিঘলকান্দি ঢালানের কাছে তেলবাহী ওই ট্রেনের আটটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তেলবাহী ওই ট্রেনটি খুলনা থেকে আসছিল।

তেলবাহী ওই ট্রেনটির মাঝখান থেকে বগিগুলো লাইনচ্যুত হয়। তাই পরে আটটি বগি রেখে সামনের অন্য বগিগুলো নিয়ে তেলবাহী ওই ট্রেনটি রাতেই রাজশাহীর হরিয়ান রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায়। এরপর রাত পৌনে ১০টার দিকে ঈশ্বরদী থেকে রিলিফ ট্রেন পৌঁছে ঘটনাস্থলে। তবে বৃষ্টির কারণে উদ্ধার কাজ শুরু করতে বিলম্ব হয়। ফলে রাজশাহী থেকে বিভিন্ন রুটের ট্রেনের বুধবার রাতের এবং বৃহস্পতিবারের যাত্রা বাতিল করা হয়। এতে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

এদিকে বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত লাইনচ্যুত আটটির মধ্যে ছয়টিকে উদ্ধার করা হয়েছে। ক্রেন দিয়ে লাইনচ্যুত বগিগুলোকে শূন্যে উঠিয়ে লাইনে স্থাপন করা হচ্ছে। একইসঙ্গে সংস্কার করা হচ্ছে রেললাইন। বাকি দুটি বগি রাত ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে তোলা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন রেলের কর্মকর্তারা।

(ঢাকাটাইমস/১১জুলাই/এলএ)