চলনবিলে চলছে মা বোয়াল নিধন

প্রকাশ | ১১ জুলাই ২০১৯, ২১:১৩

নাটোর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

বন্যার পানি আসার সাথে সাথে ‘মৎস্য ভাণ্ডার’ খ্যাত চলনবিলের বিভিন্ন জলাশয়, নদী-নালা, খাল-বিলে চলছে মা মাছ নিধনের মহোৎসব। এক শ্রেণীর অসাধু জেলে নদী ও বিলের বিভিন্ন পয়েন্টে কুচ, বাদাই ও কারেন্ট জাল এবং বানার বাঁধ দিয়ে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এসব মাছ নিধন করে স্থানীয় হাট বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি করছেন। সরোজমিনে বৃহস্পতিবার ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার ডাহিয়া ও বিলদহরসহ বিলের বিভিন্ন পয়েন্টে এক শ্রেণীর অসাধু জেলে কুচ, বাদাই জাল এবং বানার বাঁধ দিয়ে ডিমে পেট ভরপুর বোয়াল, টেংরা, বাতাসী, পুটি, মলাসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছ প্রকাশ্যে নিধন করছেন। আর বড় মাছগুলো বাঁশে ঝুলিয়ে এলাকায় বাহবা কুড়াচ্ছেন। কিন্তু সরকারিভাবে মা মাছ নিধন নিষেধ থাকলেও প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রতিদিন ডিমে পেট ভরপুর ওই মাছগুলো সিংড়া মৎস্য আড়ত ও আশেপাশের স্থানীয়ভাবে গড়ে উঠা বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। ওই মাছগুলো সরকারি কর্মকর্তারাই বেশি দাম হাকিয়ে কিনে নিচ্ছে।

সকালে সিংড়ার চলনবিলের স্থানীয় ডাহিয়া বাজারে ১২ কেজি ওজনের একটি মা বোয়াল মাছের দাম হাঁকানো হয়েছে আট হাজার টাকা। এসময় ওই মা বোয়াল মাছটি বাঁশের সাথে ঝুলিয়ে ডাহিয়া বাজারে ঘুরে ঘুরে প্রকাশ্যে বাহবা নিতেও দেখা যায়।

পরে জানা যায়, ওই বোয়াল মাছটি চলনবিলের বিলদহর এলাকা থেকে ধরেছেন ডাহিয়া গ্রামের হাবিল ও রিয়াজুল ইসলাম নামে দুই জেলে। তাছাড়াও চলনবিলের বিভিন্ন মৎস্য আড়তে প্রতি কেজি ডিমওয়ালা টেংরা ৭০০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, শিং মাছ ৭০০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে।

চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এসময়টা মাছের প্রজনন কাল। চলনবিলের মা মাছ ধরা না হলে বিলের মুক্ত জলে ডিম ছাড়ত। এতে বিলে মিঠা পানির মাছ কয়েকশ গুণ বৃদ্ধি পেত। নির্বিকারে মা মাছ নিধনে দেশীয় প্রায় ৩৯ প্রজাতির মাছ আজ বিলুপ্তির পথে। আর এ ব্যাপারে বিভিন্ন মহল থেকে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এর সাথে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত। তাই তাদের প্রতিহত করা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ বিষয়ে সিংড়া উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

(ঢাকাটাইমস/১১জুলাই/এলএ)