নেত্রকোণায় পাহাড়ি ঢলে ১১ ইউনিয়ন প্লাবিত

প্রকাশ | ১১ জুলাই ২০১৯, ২১:১৬

নেত্রকোণা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

নেত্রকোণার কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরে টানা চার দিনের বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে ১১টি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ। ২৯টি প্রাথমিক স্কুলে পানি ঢুকে পড়েছে। ৫০০ এর মতো পরিবার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। জেলা প্রশাসন বন্যার্তদের সাহায্যের জন্যে চাল বরাদ্দসহ শুকনো খাবার পাঠিয়েছে।

কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রুয়েল সাংমা জানান, বৃষ্টি আর ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়ি ঢলের পানিতে কলমাকান্দা উপজেলার আটটি ইউনিয়নের সব কয়টিতেই কমবেশি পানি ঢুকেছে। এর মধ্যে রংছাতিসহ চারটি ইউনিয়নে বেশি পানি ঢুকেছে। এতে নিচু এলাকার ৪০ থেকে ৪৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তিন শতাধিক পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার্তদের সাহায্যে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা কাজ করছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে।

কলমাকান্দা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, উপজেলার ১৭২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৯টি বিদ্যালয়ে পানি ঢুকেছে। তাছাড়া অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সংযোগ সড়কগুলোও ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়ায় স্কুলগুলো খোলা রাখা হবে। তবে শ্রেণীপাঠ নেয়া বন্ধ রাখা হয়েছে।

দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা খানম জানান, বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার কুল্লাগড়া, কাকড়গড়া ও বিরিশিরি ইউনিয়নের আট গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে।

ইউএনও জানান, এই গ্রামগুলোর প্রায় ২০০ পরিবার বাড়ি ছেড়ে ইউনিয়ন পরিষদের ভবনগুলোতে উঠেছেন। তাদের জন্যে জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার পাঠানো হচ্ছে। শুকনো খাবারের মধ্যে চিড়া, মুড়ি, গুড়, তেল, লবণ, ডাল ও চালসহ জরুরি প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী রয়েছে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান জানান, জেলার সোমেশ্বরী, উব্ধাখালি, কংশ ও ধনু নদীর পানি বাড়ছে। তবে গত চার দিন ধরে পানি উঠানামা করছে। বৃষ্টি ও ঢলের গতি বাড়লে পানি বাড়ে, আবার গতি কমলে পানি কমে। এভাবে প্রতিদিন গড়ে ৩০ সেন্টিমিটার পানি উঠানামা করছে। এতে করে মাঝে মাঝে সোমেশ্বরী, কংস ও উব্ধাখালির পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলো প্লাবিত হচ্ছে। তবে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা নাগাদ সবগুলো নদীর পানিই বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম জানান, দুই উপজেলায় ১০ মেট্রিক টন করে মোট ২০ মেট্রিকটন চাউল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ৬০০ প্যাকেট শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করার পর প্রয়োজনীয় সাহায্য দেয়া হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

(ঢাকাটাইমস/১১জুলাই/এলএ)