র‌্যাবের অভিযানে তিন ‘জঙ্গি’ গ্রেপ্তার

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০১৯, ২০:৫৯ | আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৯, ২১:১০

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

চট্টগ্রাম জেলার বন্দর থানার হালিশহর এলাকা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির তিন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১১ এর সদস্যরা। এ সময় তাদের কাছ থেকে ল্যাপটপসহ বিপুুল পরিমাণ উদ্রবাদী বই ও লিফলেট উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান র‌্যাব-১১ এর অপারেশন অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দীন চৌধুরী।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আশফাক উর রহমান অয়ন ওরফে আরিফ ওরফে অনিক (২৬), রনি আহাম্মেদ ওরফে রনি (৩১) ও রিপন মন্ডল ওরফে রিপন।

পুলিশ সুপার জানান, র‌্যাব-১১ এর একটি দল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে সিএমপি চট্টগ্রাম বন্দর থানার হালিশহর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

তিনি আরও জানান, মো. আশফাক-উর-রহমান অয়ন ওরফে আরিফ ওরফে অনিকের বাড়ী নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানাধীন নরোত্তম এলাকায়। তিনি ২০০৯ সালে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল হতে এসএসসি (বিজ্ঞান শাখা) ও ২০১১ সালে গর্ভ সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম হতে এইচএসসি পান করে ২০১৬ সালে হয়রত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ¡বিদ্যালয়, সিলেট হতে অনার্স (কম্পিউটার সায়েন্স) সম্পন্ন করেন।

সর্বপ্রথম ২০১৪ সালে মোল্লা ইব্রাহীমের বক্তব্য শুনে তার মাঝে উগ্রবাদী চেতনা জাগ্রত হয় এবং মোল্লা ইব্রাহীমের মাধ্যমে জিহাদি তৎপরতা ও আল কায়দা সম্পর্কে ধারণা নেন। পরবর্তীতে সিলেটে মোল্লা ইব্রাহীমের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ অনুসারীর মাধ্যমে মো. আশফাক-উর-রহমান অয়ন ওরফে আরিফ ওরফে অনিক আনসার-আল-ইসলামের কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। ২০১৫ সালের দিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত আনসার-আল-ইসলামের সামরিক শাখার আইটি বিভাগের দায়িত্বে নিযুক্ত হন। একই বছর তিনি ঢাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসার-আল-ইসলামের একটি ১২ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে গেরিলা যুদ্ধ সম্পর্কে তাত্ত্বিক ধারণা নেন।

সেখানে তার সাথে মেজর জিয়ার পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা হয়। ২০১৬ সালে সিলেট থেকে ঢাকায় এসে আনসার-আল-ইসলামের মিডিয়া উইং এর দায়িত্ব পালন করেন। মো. আশফাক-উর-রহমান অয়ন ওরফে আরিফ ওরফে অনিক ২০১৭ সালে মে মাসে শুরুতে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন।

এছাড়াও ২০১৭ সালের শেষের দিকে জামিনে এসে পুনরায় জঙ্গি কাজে জড়িয়ে পড়েন। দুইটি নিষিদ্ধ জঙ্গি ও উগ্রবাদী সংগঠন যথাক্রমে আনসার-আল-ইসলাম ও জামাআতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর কার্যক্রম ও আদর্শগত অভিন্নতা থাকায়, তিনি জেএমবিতে পূর্বের ন্যায় সামরিক শাখার আইটি বিভাগের শীর্ষ নেতা হিসেবে নিযুক্ত হন।

র‌্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তার মো. রনি আহম্মেদ ওরফে রনির বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানাধীন রুদ্রপুর এলাকায় এবং মো. রিপন মন্ডল ওরফে রিপনের বাড়ি রাজবাড়ী জেলার পাংশা থানাধীন কৃষ্টপুর এলাকায়। তারা দুজনই দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের ইপিজেডের দুটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। ২০১৬ সালের শুরুর দিকে মেহেদী হাসান ও আকবর হোসেন ওরফে সুমনের মাধ্যমে তারা উভয়ই জেএমবিতে যোগদান করেন। মো. রনি আহম্মেদ ওরফে রনি চাকরির পাশাপাশি জেএমবির সাংগঠনিক চালানোর সুবিধার্থে ছদ্মবেশে রাতে রিকশা চালাতেন।

র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দর থানায় সন্ত্রাস বিরোধী (জঙ্গি) দুটি পৃথক মামলার পলাতক আসামি।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা দীর্ঘদিন যাবৎ গোপনে সংগঠিত হয়ে জেএমবির কার্যক্রম পরিচালনা এবং নাশকতামূলক কাজ করার কথা স্বীকার করেছেন।

ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/ইএস