শেরপুরে ৫৬ গ্রাম প্লাবিত, পানিবন্দি ১৭ হাজার মানুষ

প্রকাশ | ১৩ জুলাই ২০১৯, ০৮:৩১

শেরপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার ৫৬ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ১৭ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিতে শ্রীবরদীর তিনটি ও ঝিনাইগাতীর পাঁচটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

প্লাবিত গ্রামগুলোর কাঁচা ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, রোপা আমন ধানের বীজতলা, সবজি বাগান ও পুকুরের মাছ পানিতে তলিয়ে গেছে। অন্যদিকে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন আবহাওয়া অপরিবর্তিত থাকলে পানিবন্দিদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা হবে।

জানা গেছে, গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতী সদর, ধানশাইল, মালিঝিকান্দা, হাতিবান্দা ও গৌরিপুর ইউনিয়নের ৪০টি গ্রাম ও শ্রীবরদীর কুচনীপাড়া, রানী শিমুল, ভটপুর, বিলভরাট, কাকিলাকুড়া, ঝগড়ারচর ও শিমুলচুড়াসহ ১৬টি গ্রামের প্রায় ১৭ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।

প্লাবিত গ্রামের রাস্তাঘাট, আমন ধানের বীজতলা ও সবজি বাগান পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে তিন শতাধিক পুকুরের মাছ। খড়ের সংকট দেখা দেওয়ায় গৃহপালিত পশু নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে।

এছাড়া বাড়িতে পানি উঠায় চুলা জ্বালাতে পারছেন না প্লাবিত এলাকার মানুষ। শুকনো খাবার খেয়েই দিন পার করছেন তারা।

ঝিনাইগাতীর সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন চাঁন বলেন, গত পাঁচ বছর ধরে ঝিনাইগাতীতে থেমে থেমে ও মুষলধারে বৃষ্টি হয়। সেই সঙ্গে সীমান্তের ওপারের উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবল বেগে মহারশি নদীর দিঘীরপাড় এলাকার নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ওই এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দার বাড়ি-ঘর ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া তার ইউনিয়নের বড়গাডুবি, কালিনগর, সারিকালিনগর, দড়িকালিনগর, দীঘিরপাড়, চতল, লঙ্কেশ্বর, পাইকুড়া, জরাকুড়া, কোনাগাঁও গ্রাম ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

ধানশাইল ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল বলেন, পাহাড়ি ঢলে সোমেশ্বরী নদীর পানি বেড়ে তার ইউনিয়নের নয়াপাড়া, দাড়িয়ারপাড়, কান্দুলী, মাঝাপাড়া, বাগেরভিটা গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে কাঁচা ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, রোপা আমন ধানের বীজতলা, পুকুরের মাছ পানিতে তলিয়ে গেছে।

গৌরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান মন্টু বলেন, মহারশি নদীর বনগাঁও এলাকার নদীর বাঁধ ভেঙে জিগাতলা, বনগাঁও, খাপাড়া প্লাবিত হওয়ায় রোপা আমন ধানের বীজতলা তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।

মালিঝিকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম তোতা বলেন, পানিতে হাঁসলিবাতিয়া, রাঙ্গামাটিয়া, দেবত্তরপাড়া, বানিয়াপাড়া, জুলগাঁও প্লাবিত হয়েছে। 

ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, ঢলের পানিতে ১৫ হেক্টর রোপা আমন ধানের বীজতলা আংশিক নিমজ্জিত আছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু সিরাজুস সালেহীন বলেন, ‘আমি বেশ কিছু এলাকা পরির্দশন করেছি। কিছু কিছু এলাকার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।’ তবে ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেননি তিনি।

বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছে উপজেলা প্রশাসন। তবে যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ।

ঢাকাটাইমস/১৩জুলাই/প্রতিনিধি/এমআর