গেইলের উইকেটটিই সাইফউদ্দিনের কাছে সেরা

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৩ জুলাই ২০১৯, ০৯:৪৯

১৮ জুন ২০০৫। বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকদের কাছে এই দিনটি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। এ দিনই প্রথমবার অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ক্রিকেট দুনিয়ায় সাড়া ফেলেছিল বাংলাদেশ। ১০১ বলে সেঞ্চুরি করে নতুন নায়ক হয়ে উঠেছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল।

সেই তরুণ ব্যাটসম্যানের উত্থানের দিনে তৈরি হয়ে গিয়েছিল বেশ কিছু স্বপ্ন। যার বেশির ভাগই বাস্তবে পরিণত হতে পারেনি। কিন্তু তার মধ্যেই একটি ছেলে হাল ছাড়েনি। ফেনী জেলার সন্তান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন বিশ্বমঞ্চে সাড়া ফেলে দিয়েছেন। চলতি বিশ্বকাপে মোস্তাফিজুর রহমানের পরে তিনিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক। সাত ম্যাচে তাঁর উইকেট সংখ্যা ১৩।

২২ বছর বয়সী অলরাউন্ডার ভারতের বিরুদ্ধে ৩৮ বলে অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংস খেলে দেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। সে ম্যাচে বাংলাদেশ হারলেও ক্রিকেটবিশ্বে পরিচিত হয়ে ওঠেন সাইফউদ্দিন। যে জ্যাসপ্রীত বুমরাহ, মোহাম্মদ শামিদের সামলাতে রাতের ঘুম চলে গিয়েছিল অনেক বড় দলের ব্যাটসম্যানের। তাঁদের বিরুদ্ধে ৯টি চার মেরে এই অমূল্য ইনিংস গড়েন তিনি।

এই ম্যাচে খেলার সময় ভারতীয় ক্রিকেটার ধোনির বিশেষ কৌঁশল ধরে ফেলেন সাইফউদ্দিন। ভারতীয় একটি দৈনিক পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন বলেছেন, ‘ধোনি কেন অধিনায়ক হিসেবে এত সফল, তা জানার চেষ্টা করতাম ছোট থেকেই। বুঝতাম, উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে আঙুল ও হাতের মাধ্যমে বোলারকে কিছু একটা নির্দেশ দেয়। ভারতের বিরুদ্ধে ব্যাট করার সময় প্রত্যেক বলের আগে একবার ধোনির দিকে তাকাতাম। লক্ষ্য করতাম হাত দিয়ে ঠিক কী ইশারা করে!’

সাইফউদ্দিন বলেছেন, ‘হার্দিক বল করার সময় ধোনিকে দেখছিলাম বারবার বুকে হাত দিচ্ছে। তার পরের বলটিই বাউন্সার করছে হার্দিক। তখনই বুঝলাম, এটা বাউন্সারের নির্দেশ। কখনও দেখছিলাম বুমরাকে পায়ের দিকে আঙুল দেখাচ্ছে। পরের বলেই ইয়র্কার ধেয়ে আসছে। এভাবেই একাধিক ইঙ্গিত দিয়ে ব্যাটসম্যানকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে ধোনি।’

সাইফউদ্দিনের বাবা আব্দুল খালেক পুলিশে চাকরি করেন। চাইতেন ছেলে পড়াশোনা করে ভাল চাকরি করুক। কিন্তু ছেলের স্বপ্ন যে কখনোই ১০টা-৫টার একঘেয়ে জীবনে আবদ্ধ থাকতে রাজি ছিল না। শাহীন একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওপেনার হিসেবে প্রচুর রান করেছিলেন। সেখান থেকেই উত্থান। তার পরে অনূর্ধ্ব-১৬ বিভাগে চট্টগ্রামের হয়ে ৫৪৬ রান ও ২৪টি উইকেট নিয়ে জাতীয় ক্রিকেটে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। সেখান থেকে আর ঘুরে দেখতে হয়নি।

বাবা পুলিশ হলেও কিট্‌স কেনার জন্য তাঁর কাছে টাকা চাইতেন না সাইফউদ্দিন। ‘খেপ ক্রিকেট’ খেলে ম্যাচ প্রতি চারশো টাকা করে পেতেন। একশো টাকা হাত খরচের জন্য রেখে তিনশো টাকা করে জমাতেন। তা দিয়েই ক্রিকেটের সরঞ্জাম কিনে আনতেন। সাইফউদ্দিন বলেছেন, ‘এ ধরনের ক্রিকেট শুধু অর্থ সংগ্রহের রাস্তাই দেখায়নি, সঙ্গে গড়ে তুলেছে লড়াকু মনোভাবও। যাঁদের হয়ে খেলতাম, তাঁরা টাকা দিতেন ঠিকই, কিন্তু পারফর্ম করতে না পারলে কটূ মন্তব্যও শুনতে হত।’

বিশ্বকাপে যে ১৩টি উইকেট পেয়েছেন তার মধ্যে গেইলের উইকেটটিই সাইফউদ্দিনের কাছে সেরা। তাছাড়া প্রস্তুতি ম্যাচে নেয়া বিরাট কোহলির উইকেটটিও তার কাছে বিশেষ কিছু। তিনি বলেছেন, ‘অবশ্যই ক্রিস গেইলের উইকেট। তাছাড়া প্রস্তুতি ম্যাচে বিরাট কোহালিকে বোল্ড করে সবচেয় খুশি হয়েছিলাম। ওর মতো ব্যাটসম্যানকে আউট করা যেকোনো বোলারের কাছেই স্বপ্ন।’

(ঢাকাটাইমস/১৩ জুলাই/এসইউএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :