নেত্রকোণায় বন্যার অবনতি, নতুন এলাকা প্লাবিত

নেত্রকোণা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৩ জুলাই ২০১৯, ১৫:০৩

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ছয় দিনের টানা বৃষ্টিতে নেত্রকোণায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় জেলার সোমেশ্বরী, উব্ধাখালি ও কংশ নদীর পানিও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। সেই সঙ্গে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

গতকাল শনিবার বন্যা দুর্গত এলাকার জন্য আরও ত্রাণের চাল বরাদ্দ দেয়াসহ শুকনো খাবারের প্যাকেট পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও বন্যার্তরা জানিয়েছেন, ১৫টি ইউনিয়নের তিন শতাধিক গ্রামে পানি ঢুকেছে। এসব গ্রামে লক্ষাধিক মানুষ বসবাস করছেন। এদের মধ্যে অন্তত ছয় শতাধিক পরিবারের ঘরের ভেতরে পানি ঢুকেছে। তারা অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। অনেক এলাকায় প্রশাসনের ত্রাণ এখনও না পৌঁছানোর অভিযোগ করেছেন বন্যার্তরা।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আরিফুল ইসলাম জানান, গত শুক্রবার রাতভর বৃষ্টিতে দুর্গাপুরের গাওকান্দিয়া ইউনিয়নের পুরো এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কুল্লাগড়ায় নদী ভাঙন ধরেছে। এতে করে কুল্লাগড়ার পুরো ইউনিয়ন হুমকিতে পড়েছে। ভাঙন ঠেকাতে বালির বস্তা ফেলে প্রশাসন চেষ্টা করছে। বারহাট্রায় বাউশি ইউনিয়নের পাশাপাশি নতুন করে প্লাবিত হয়েছে আসমা ও সাহতা ইউনিয়নের অর্ধশত গ্রাম। এতে করে দূর্গাপুর, কলমাকান্দা ও বারহাট্রা উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবকেরা ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন বন্যার্তদের কাছে। নতুন করে ৩০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া আরও ৯০০ প্যাকেট শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে।

আরিফুল ইসলাম আরও জানান, নিজ নিজ কর্মস্থলে থেকে বন্যার্তদের সেবা দিতে স্থানীয় প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও বন্যা এলাকায় ত্রাণ বিতরণে অংশ নিয়েছেন। পর্যাপ্ত পরিমানে ত্রাণ রয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে আরও ত্রাণ আসবে। রবিবার জেলা সদর থেকে নতুন আরও ত্রাণ পাঠানো হবে। দুর্যোগ মোকাবেলায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আক্তারুজ্জামান জানান, বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় ও ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় নদীর পানি বাড়ছে। উব্ধাখালি নদীর পানি বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। সোমেশ্বরী ও কংশের পানি বিপৎসীমার ছুঁই ছুঁই অবস্থায় প্রবাহিত হচ্ছে। দুর্গাপুরের বিজিবি ক্যাম্প, লোকনাথ আশ্রমসহ কুল্লাগড়া ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বালির বস্তা দিয়ে ওই সব ভাঙ্গন রোধে চেষ্টা করা হচ্ছে।

জেলা সিভিল সার্জন তাজুল ইসলাম জানান, বন্যার্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে এলাকায় মেডিকেল টিম ও স্বাস্থ্য সহকারীরা কাজ করছেন। স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় ওষুধও দেয়া হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সহকারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। দুর্যোগ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত কাউকে ছুটি দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।

ঢাকাটাইমস/১৩জুলাই/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :