ভাঙনের হুমকিতে আরিচা ঘাট

প্রকাশ | ১৪ জুলাই ২০১৯, ০৮:২১

মঞ্জুর রহমান, মানিকগঞ্জ

বর্ষা মৌসুমের শুরুতে যমুনায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আরিচা ঘাট ও আশপাশের এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। দুই সপ্তাহে কমপক্ষে ৫০ ফুট এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে এবং ক্রমশ আরিচা ট্রাক টার্মিনাল ও শিবালয় বাজারের দিকে এগিয়ে আসছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে শিবালয় বাজার, আরিচা নদী বন্দর, নবনির্মিত আবহাওয়া অফিস, প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট ও তেওতা-জাফরগঞ্জ রাস্তাসহ আশপাশের গ্রামগুলো।

দীর্ঘদিন ধরে একশ্রেণির মাটি ব্যবসায়ী রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে শুষ্ক মৌসুমে নদীর তীরবর্তী এলাকায় অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করায় নদীতে এই ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, আরিচা ট্রাক টার্মিনালের পশ্চিম পাশে নদীতে ঘূর্ণিপাকের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলে এলাকাবাসী মনে করছেন।

আরিচা বাজারের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে আরিচায় ব্যবসা করছি। আমার বয়সে এরকম ভয়াবহ ভাঙন দেখিনি। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আরিচা ঘাট ও শিবালয় বাজার নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘এবার যেভাবে নদী ভাঙছে এরকম ভাঙন আজ থেকে প্রায় ৫০ বছর আগে আমরা দেখেছি। একবার ভাঙন শুরু হলে বাড়ি-ঘর, জমি মুহূর্তে নদীতে তলিয়ে যেত, সরানোরও সময় পাওয়া যেত না। এবারও সেরকম দেখছি। কারণ, বিগত বছরগুলোতে যেখানে চর পড়ে নদী ভরাট হয়ে যেত, এবার সেখানে অনেক গভীরতা সৃষ্টি হয়ে পানি ঘূর্ণিপাক খাচ্ছে।’

শিবালয় গ্রামের হারুন শেখ বলেন, ‘নদী পাড় এলাকায় ড্রেজিং করায় ক্যানেলের সৃষ্টি হয়ে স্রোত পড়েছে। নদীর মাঝে চর থাকায় আরেকটি স্রোত ওই চরে বাড়ি খেয়ে এপার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুই স্রোত একত্রিত হয়ে আরিচা ঘাটের পাড় ঘেঁষে প্রবাহিত হওয়ায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে।’

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, ‘আরিচা নদীবন্দর ভাঙন রক্ষায় আমাদের হাতে এই মুহূর্তে কোনো বাজেট নেই। বিষয়টি আমরা কর্তৃপক্ষকে জানাব। বাজেট পেলে ভাঙন রক্ষায় কাজ করা হবে।’

জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস জানান, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাঙন রক্ষায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

ঢাকাটাইমস/১৪এপ্রিল/প্রতিনিধি/এমআর