রিফাত হত্যা: মিন্নিকে গ্রেপ্তারের দাবি শ্বশুরের

বরগুনা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৪ জুলাই ২০১৯, ০৮:৪৭ | প্রকাশিত : ১৪ জুলাই ২০১৯, ০৮:৪৪

বরগুনায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার শিকার রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ তার পুত্রবধূ আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির গ্রেপ্তার দাবি করেছেন।

শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি করেন নিহত রিফাতের বাবা আবদুল হালিম।

রিফাত শরীফের বাবা বলেন, ‘রিফাত হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা মিন্নি। নয়নের সঙ্গে মিন্নির বিয়ে হয়েছিল। সেই বিয়ের কথা গোপন রেখে রিফাতের সঙ্গে মিন্নির বিয়ে দেয় তার পরিবার। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মিন্নি জড়িত রয়েছে। তাই তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনাতে হবে।’

রিফাত হত্যাকাণ্ডে মিন্নি জড়িত থাকার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘মিন্নি প্রতিদিন একাই কলেজে যেতেন। ঘটনার দিনও তিনি একা কলেজে গিয়েছিলেন। এরপর মিন্নি ফোন করে রিফাতকে কলেজে ডেকে নেন।’

‘রিফাতের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পরেও প্রতিনিয়ত নয়ন বন্ডের সঙ্গে মিন্নির যোগাযোগ ছিল। প্রায় প্রতিদিন নয়ন বন্ডের বাড়িতে আসা-যাওয়া করতো সে। রিফাতকে হত্যার সময় সিসি টিভির ফুটেজে দেখা গেছে সরকারি কলেজের সামনের গেটে মিন্নিকে রিফাত তার মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নিয়ে যেতে চায়, তখন মিন্নি সময়ক্ষেপণ করে। এরমধ্যেই বন্ড গ্রুপ রিফাতকে মারধর করতে করতে কলেজের পূর্ব দিকে নিয়ে যায়। সেসময়ে মিন্নি স্বাভাবিকভাবেই সেই সব দৃশ্য দেখতে থাকে এবং তাদের পেছনে হাঁটতে থাকে। পরে যখন রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী দা নিয়ে এসে নয়নের হাতে দিয়ে কোপাতে শুরু করে, তখন মিন্নি বাধা দিলেও তাকে কেউ আঘাত করেনি।’ এসব কারণে মিন্নিকেই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা দায়ী করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।

রিফাত শরীফের বাবা বলেন, ‘নিহত নয়ন বন্ডের মা সাহিদা বেগম বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মিন্নি ঘটনার আগের দিনও তাঁর বাসায় গেছেন এবং নয়নের সঙ্গে দেখা করেছেন। এছাড়া সেদিন কলেজ গেট থেকে রিফাত শরীফকে ধরে নেওয়ার সময় মিন্নি নির্লিপ্ত ছিলেন। এরপর কুপিয়ে জখম করার পর মিন্নি রিফাতকে হাসপাতালে নেওয়ার বদলে নিজের জুতা খুঁজছিলেন এবং আক্রমণকারীদের একজন তাঁর (মিন্নি) হাতব্যাগ তুলে দিচ্ছিল। আবদুল হালিম বলেন, এতগুলো তরুণ রিফাতের ওপর হামলা চালাল অথচ একটি আঘাতও মিন্নির শরীরে লাগল না-এটা রহস্যজনক।’

আবদুল হালিম বলেন, রিফাত রক্তাক্ত অবস্থায় একাই রিকশায় করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে যান। এরপর যখন গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে অ্যাম্বুলেন্সে বরিশাল নেওয়া হয় তখন মিন্নি তাঁর সঙ্গে যাননি।

রিফাত শরীফের বাবা বলেন, ‘আমার প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব ক্ষেত্রে মিন্নির ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার ঝড় বইলেও কেন তাঁকে (মিন্নি) আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না। এ অবস্থায় আমি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজিপির কাছে দাবি জানাই, অবিলম্বে মিন্নিকে আটক করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। আর সেটা করা হলেই রিফাত শরীফ হত্যার মূল রহস্য উদ্ঘাটন হবে’।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- নিহত রিফাত শরীফের চাচা আব্দুল আজিজ শরীফ ও ছালাম শরীফ। এছাড়া স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী, রিশান ফরাজীসহ তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার পর বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর মধ্যে মামলার মূল হোতা নয়ন বন্ড আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।

ঢাকাটাইমস/১৪এপ্রিল/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :