বান্দরবানে পাহাড় ধসে নিহত ২, বন্যার অবনতি

প্রকাশ | ১৪ জুলাই ২০১৯, ১৮:৫০

বান্দরবান প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

বান্দরবানে প্রবল বর্ষণের কারণে পাহাড়ের মাটি চাপা পড়ে মারা গেছেন দুইজন। এ ছাড়া বন্যার পরিস্থিতির অবনতির কারণে চার দিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে উপজেলাগুলোতে। সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন আছে।

লামা সদর ইউনিয়নের ১ নাম্বার ওয়ার্ডের মধুঝিরি আগা পাড়ায় শনিবার রাত একটার দিকে বসতবাড়ির ওপর পাশের পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ে। সেখানে ঘুমন্ত অবস্থায় মারা যান নুরজাহান বেগম (৬৫)। এ সময় একই বাড়ির ইরান ও ফাতেমা নামে দু’জন আহত হন। তারা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী।

রবিবার দুপুরে লামা পৌরসভার মেয়র জহিরুল আলম জানান, সকালে খবর পেয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে কবর দেবার ব্যবস্থা করেছি। আহত দু’জনকে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া চিম্বুক পোড়া পাড়ার বাসিন্দা চমওয়াই ম্রো জানান, শনিবার বিকালে বাগানে কাজ করার সময় মাটি চাপা পড়ে মারা যান জুম চাষী মেনপং ম্রো (২৫)।

সদর উপজেলা চেয়ারম্যাম একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘মাটি চাপা পড়ে একজন মারা গেছে বলে ওই এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়েছি। তবে মোবাইল নেটওয়ার্কে সমস্যা থাকায় বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি।

এদিকে গত এক সপ্তাহ ধরে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বান্দরবানের নদী তীরবর্তী স্থান এবং নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। বান্দরবান সদর ও লামা উপজেলায় প্রায় ৫ হাজারেরও বেশি পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। ৫০হাজারেরও বেশী মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে।

বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুইদিন বৃষ্টিপাত কিছুটা কম থাকলেও শনিবার থেকে আবারো ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সাঙ্গু নদীর উজানের বৃষ্টিতে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বান্দরবান শহরের শেরেবাংলা নগর, আর্মি পাড়া, ইসলামপুর, ফায়ার সার্ভিস এলাকা, বালাঘাটাসহ বিভিন্ন এলাকা ৮ থেকে ১০ ফুট পানির নীচে তলিয়ে গেছে। পাকা ভবনগুলোর দোতালা থেকে উপরের দিকে আশ্রয় নিতে গিয়ে আটকা পড়েছেন অনেকেই।

বিভিন্ন স্থানে সড়ক ডুবে জেলার সাথে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও কক্সবাজারের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতেও চলছে না কোনো যানবাহন। উপজেলাগুলোতে চারদিন ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই। জেলা শহরেও বিদ্যুতের বিভিন্ন যান্ত্রিক স্থাপনা ডুবে যাওয়ায় শনিবার ভোর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎ সংকটে মোবাইল ফোন সার্ভিস বিঘ্নিত হচ্ছে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলাজুড়ে ১৩১টি আশ্রয়কেন্দ্রে রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে বিভিন্ন্ এলাকায় পানীয় জলের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় স্থানীয় হাটবাজারগুলোতে খাদ্যসামগ্রী এবং নিত্যপ্রয়োজনী দ্রব্যের দাম বেড়ে গেছে।

ঢাকাটাইমস/১৪জুলাই/ইএস