সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢলে ভেসে গেছে ৬২১ পুকুরের মাছ

প্রকাশ | ১৪ জুলাই ২০১৯, ২২:৫৬

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

সুনামগঞ্জে গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ৬২১টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এসব মাছের মধ্যে রয়েছের রুই, মৃগেল, গ্রাসকার্প, সিলভারকার্প ও পোনা, রেনু। এতে প্রায় ২কোটি ৬২ লাখ ৩৪ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
পাড় উপচে পানি প্রবেশ করায় পুকুরের চারপাশে নেট দিয়েও চাষ করা মাছ আটকে রাখতে পারেনি খামারিরা।
হাজার হাজার টাকা খরচ করে মাছ চাষ করে খামারিরা এখন নিঃস্ব।

মৎস্যচাষিরা বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ করে বাড়ির পাশের পুকুরে মাছ চাষ করে ছিলেন। মাছ বিক্রির টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করার কথা ছিল। এখন মাছ সরকারের সহযোগিতা না পেলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন না বলে জানান ক্ষতিগ্রস্থ মৎসচাষীরা।

জেলা মৎস্য অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত চারদিনের পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণ এবং এর আগের ঢল ও বর্ষণে সদর উপজেলার ১২৫টি, ছাতকের ৪টি, ধর্মপাশা উপজেলার ২৩টি, তাহিরপুর উপজেলার ২০টি, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ৩৩৬টি, দোয়ারাবাজার উপজেলায় ৭৮টি, দক্ষিণ সুনামগঞ্জের ১০টি এবং জামালগঞ্জের ২৫টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রায় ২কোটি ৬২ লাখ ৩৪ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।

জেলা মৎস্য বিভাগে আরো জানায়, গত মাসের শেষ দিকে বন্যায় বিশ্বম্ভরপুরে ২৫০টি, সদরে ১১৭টি, দোয়ারবাজারে ৩১টি পুকুরের ৫৭টন মাছ, ৪৩লাখ পোনা ও ভেসে যাওয়া মাছের বাজারদর একশো ১২কোটি টাকা। পোনার মূল্য ৩১লাখ টাকা, অবকাঠামোগত ক্ষতি ১৭লাখ টাকা।
 
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের চালবন গ্রামের মাছ চাষি হেলাল মিয়া বলেন, হঠাৎ করে পানি এসে তার পুকুরের ত্রিশ হাজার টাকার রুই, মৃগেল, গ্রাসকার্প সিলভারকার্প মাছ ভাসিয়ে নিয়ে যায়। পানির প্রবল চাপে পুকুরের পাড়ও কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সলুকাবাদ ইউনিয়নের দেড় শতাধিক পুকুরের মাছ ঢলের পানিতে ভেসে গেছে। প্রতিটি পুকুরে গড়ে লাখ টাকার মাছ ছিল।

জগন্নাথপুর গ্রামের শহীদ মিয়া বলেন, পুকুরে ৫হাজার টাকার বিভিন্ন জাতের পোনা মাছ ছেড়ে ছিলেন। কিন্তু এখন পুকুরে আর কোন মাছ নেই সব মাছ ঢলের পানিতে ভেসে গেছে।

জেলা শহরের হাছন নগরের মৎস্য খামারি রফিকুল ইসলাম বলেন, দুই দফা বন্যায় আমার পুকুরের ২-৩ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। আমি এখন নিঃস্ব। সরকারি সহযোগিতার জন্য মৎস্য অফিসে লিখিত আবেদন করেছি।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মেহেদী হাসান ভূঁইয়া বলেন, উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ্যকে পাঠানো হয়েছে। সরকারের সহযোগিতা এলে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক বলেন, দুই দফা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলার ৬২১টি পুকুরের প্রায় ২কোটি ৬২লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। এতে বিভিন্ন উপজেলার খামারিদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির হিসাব আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি।

ঢাকাটাইমস/১৪জুলাই/ইএস