খননে যৌবন ফিরেছে রাজবাড়ীর হড়াই নদীর

প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০১৯, ১০:০২

এম. মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী

রাজবাড়ীর পদ্মার শাখা হড়াই নদীটি পুনঃখনন প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আর এ হড়াই নদী-খাল খননের ফলে সদর ও বালিয়াকান্দি উপজেলার বিস্তৃর্ণ অঞ্চলের চেহারা পাল্টে যাচ্ছে। একই সঙ্গে খালটি খননের ফলে নতুনভাবে পঞ্চার হাজার একর বোরো ও আমন ফসলের জমি উৎপাদনের আওতায় আসবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।

হড়াই নদী খননের ফলে সদরের খানগঞ্জ, চন্দনা, মিজানপুর ও বালিয়াকান্দির বহরপুর, ইসলামপুর ও জামালপুর ইউনিয়নের হাজার হাজার একর জমিতে শুষ্ক মওসুমে বিনা খরচে জমিতে সেচ দিতে পারবে কৃষকরা। এছাড়া জেলেরা মুক্ত জলাশয়ে মাছ চাষ এবং নদী পারের মানুষ আর্সেনিকমুক্ত পানি ব্যবহার করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে। এতে করে একই সঙ্গে সদর ও বালিয়াকান্দি উপজেলার হড়াই নদীর দুপাড়ের মানুষের আর্তসামাজিক উন্নয়ন করার সুযোগ পাবে।

তাই নদী খননের ফলে এক কালের খরস্রোতা এখন মৃতপ্রায় হড়াই নদীতে এখনই পানির প্রবাহ সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার মানুষ মনে করেন খননের ফলে রাজবাড়ীর হড়াই নদীর যৌবন ফিরে এসেছে।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী কৃষণ বিকাশ সরকার জানান, দীর্ঘদিন ধরে হড়াই নদীর মুখ পদ্মার খাড়ি থেকে ২.১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত সমতল ভূমি হয়ে গিয়েছিল। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন কোন সংস্কার না করার ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের হরিহরপুর স্লুইচ গেট উঁচু হয়ে যায়। এতে মূল পদ্মা থেকে বর্ষাও পানি ওই হড়াই নদীতে ঢুকতে পারত না। ফলে হড়াই নদী ছিল মৃতপ্রায়। প্রধানমন্ত্রীর নদী-খাল খননের অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ কিলোমিটার হড়াই নদী খনন প্রায় শেষের পথে। ওই নদী খননের পর এখন পদ্মায় পানি বৃদ্ধির সাথে সাথেই স্লুইচ গেট দিয়ে অতি সহজেই বর্ষার পানি হড়াই নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।

নদী দখলের ব্যাপারে স্থানীয়রা শঙ্কা জানালেও বিষয়টি নিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান খান জানান, আর কোন দখলদারি হবে না। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের এবং সংশ্লিষ্ট খালের পানি ব্যবস্থাপনা কমিটিকে তদারকি করার কাজে নিয়োজিত রাখা হয়েছে।

দীর্ঘদিন পর নদী খনন হলেও জেলার সদর ও বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষকেরা জানিয়েছেন, কোটি টাকা ব্যয়ে এ নদী খনন করা হলেও দুই উপজেলার মাঠের পানি প্রবাহের কোন সুযোগ রাখা হয়নি।  

রাজবাড়ী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুরে সরকার গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। তবে বর্তমানে ওই প্রকল্পটির কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, নদীগুলোর নাব্য ফেরাতে তারা আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে পদ্মা, চন্দনা, হড়াই, চত্রা নদীসহ জেলার বিভিন্ন খালের নাব্য ফেরাতে ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

রাজবাড়ী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম আরো জানান, শিগগির পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এরই মধ্যে ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। তিনি আরো জানান, হড়াই, চন্দনা ও চত্রা নদী-খাল পুনঃখননের কাজ শেষ হলে নতুনভাবে ৫০ হাজার একর জমি বোরো ও আমন ফসল উৎপাদনের আওতায় আসবে।

ঢাকাটাইমস/১৫এপ্রিল/প্রতিনিধি/এলএ