মুক্তি পেলেন রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পাওয়া সেই শিক্ষক

জামালপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৬ জুলাই ২০১৯, ২০:৩৫

রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমার পরেও ১০ বছর কারাভোগ শেষে মুক্তি পেলেন বৃদ্ধ শিক্ষক আজমত আলী। আইনি জটিলতায় বিনাদোষে এই কারাভোগের পর মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে হাইকোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশে তাকে মুক্তি দেয় জামালপুর কারা কর্তৃপক্ষ।

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের পাখিমারা গ্রামের ইজ্জতউল্লাহ সর্দারের ছেলে আজমত আলী টাঙ্গাইলের গোপালপুরের ভেঙ্গুলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে একটি হত্যা মামলায় ১৯৮৯ সালে জামালপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত আজমত আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডদেশ দেয়।

এই আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিলের পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির কাছে সাধারণ ক্ষমার প্রার্থনা করে আজমত আলীর পরিবার। সেই আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমায় ১৯৯৬ সালের ২১ আগস্ট জামালপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান আজমত আলী।

পরে ২০০৫ সালের ২ মার্চ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ, যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ২০০৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আসামি আজমত আলীকে নিম্ন আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়। হাজির না হলে ২০০৯ সালের ২৯ অক্টোবর গ্রামের বাড়ি থেকে আজমত আলীকে প্রেপ্তার করে নিম্ন আদালতে সোপর্দ করে সরিষাবাড়ি থানা পুলিশ। সেই থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।

২০১৮ সালের অক্টোবরে আজমত আলীর মেয়ে বিউটি খাতুন তার বাবার মুক্তি চেয়ে আইনি সহায়তা পেতে সুপ্রিম কোর্টে লিগ্যাল এইডে আবেদন করেন। পরে সে আবেদন পর্যালোচনা করে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যানের নির্দেশে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদনের সিদ্ধান্ত নেয়।

গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেয়। আপিল বিভাগের নির্দেশে অবশেষে তাকে মুক্তি দেয় কারা কর্তৃপক্ষ।

আজমত আলীর কন্যা রাষ্ট্রপতির নির্দেশের পর আইনি জটিলতায় বিনা দোষে তার বাবা ১০ বছর কারাভোগ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এখন তার বাবার জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া দশ বছর আর পাওয়া যাবে না বলে মনে করেন তিনি। বাবাকে কাছে পেয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

সদ্যমুক্তি পাওয়া আজমত আলী বলেন, ‘আইনি জটিলতায় বিনাদোষে আমি বৃদ্ধ বয়সে কারাগারে ১০ বছর মানবেতর জীবন অতিবাহিত করেছি। কারো জীবনে যেন এমন ঘটনা না ঘটে।’

জামালপুর কারাগারের জেল সুপার মকলেছুর রহমান বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশের কপি পাওয়া মাত্রই তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। তার মুক্তিতে কারা কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট।’

(ঢাকাটাইমস/১৬জুলাই/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :