গরুর গোশত থাকার সন্দেহে মাদ্রাসায় অগ্নিসংযোগ

প্রকাশ | ১৭ জুলাই ২০১৯, ০৮:৫০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস

ভারতের বিজেপিশাসিত উত্তর প্রদেশের ফতেপুর জেলার একটি মাদ্রাসায় গরুর গোশত থাকার সন্দেহে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা পাথর নিক্ষেপ ও ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মঙ্গলবার ওই ঘটনায় ওই এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। 

ওই ঘটনার পরে সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের সুপারিনটেনডেন্ট রমেশ বলেন, ‘মঙ্গলবার বেহতা গ্রামে গরুর গোশত উদ্ধার হওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর কিছু অরাজকতা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি মাদ্রাসায় হামলা চালিয়ে পাথর নিক্ষেপসহ আগুন ধরানোর চেষ্টা করে। ওই ঘটনায় কোনো হতাহতের তথ্য নেই।’

জেলা পুলিশ সুপার রমেশ বলেন, এ ব্যাপারে একটি মামলা রুজু করে পরিবেশ অশান্ত করা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট গ্রামে শান্তি রয়েছে এবং সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের অনেক কর্মকর্তা উপস্থিত রয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা অবশ্য ওই ঘটনায় পুলিশের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন। সোমবার মাদ্রাসার পিছন দিকের একটি জায়গায় গবাদি পশুর দেহাবশেষ পাওয়া যায়। ওই ঘটনায় এলাকার মানুষজন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। কিন্তু মঙ্গলবার ফের একই জায়গায় গবাদিপশুর দেহাবশেষ মেলায় ক্ষুব্ধ জনতা মাদ্রাসায় ভাঙচুর চালিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনাস্থলে দ্রুত পুলিশ পৌঁছে তাদেরকে হটিয়ে দেয়।

এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের জনশিক্ষা প্রসার ও গ্রন্থাগার পরিসেবা দফতরের মন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী মঙ্গলবার) রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘ওই ঘটনা অত্যন্ত অন্যায়, গণতন্ত্র বিরোধী ও ভারতবিরোধী। এসব তারা (হিন্দুত্ববাদীরা) করবে। কিন্তু এসব করেও তারা টিকতে পারছে না। ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির জয় আছে। এটা অধর্মের কাজ। ধর্মনিরপেক্ষতার কাজ নয়। এসব কাজকর্ম করে তারা পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলতে চাচ্ছে। হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিদ্বেষ সৃষ্টি করে দাঙ্গা বাধাতে চাচ্ছে।’ 

মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘মুসলিম সমাজ টিকে আছে মাদ্রাসা শিক্ষার উপরেই। মৌলিকভাবে মাদ্রাসা শিক্ষাকে আঘাত দিলে আগামীদিনে ধর্মীয় শিক্ষা লোপাট হয়ে যাবে। এজন্য তারা মাদ্রাসার বিরুদ্ধচারণ করছে। ভারতের সংবিধান মাদ্রাসাকে অধিকার দিয়েছে। আর্টিকেল ৩০, আর্টিকেল ২৫ বা ২৬। মৌলিক অধিকারের ভিত্তিতে ভারতের সংবিধান আছে। ওরা সংবিধান পড়ে দেখুক। কে গরুর গোশত খেল না খেল, এমনিই গরুর গোশত উত্তর প্রদেশে পাওয়া যায় না। কোনো মাদ্রাসায় তা খাবে কীভাবে? আসলে ওরা কোনো ইস্যু পাচ্ছে না। মানুষ আর নতুনভাবে কোনো ইস্যু গ্রহণ করছে না। তাদের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরানোর জন্য এগুলো তারা করছে। এজন্য সতর্ক থাকতে হবে। ওদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। কেন্দ্রীয় সরকারে যারা বসে আছে তারা কী এসব দেখতে পান না? তাদের কী দায়িত্ব নেই?’

ঢাকা টাইমস/১৭জুলাই/একে