নতুন ঘর পাচ্ছেন সব হারানো মিকিরজান

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ জুলাই ২০১৯, ১৭:০৬

‘বিয়ের পর স্বামী-সন্তান নিয়ে সুখেই ছিলেন সত্তর বছর বয়সী মিরিকজান। কিন্তু একে একে হারিয়েছেন তার দুই সন্তানকে। সঙ্গে স্বামীকেও। সে সময় মিরিকজানের মনে হয়েছিল এই বেঁচে থাকাটা অর্থহীন। কিন্তু জীবন চলে আপন নিয়মে।

সব হারানো মিরিকজানের স্বাধীনতার আগে ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের চকপাড়া গ্রামের মগর আলীর সঙ্গে বিয়ে হয় তার। দাম্পত্যজীবনে তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে ছিল। বর্তমানে মিরিকজান সব হারিয়ে চকপাড়া গ্রামের ফাতেমা বেগমের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। বাবার বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলায়।

বৃদ্ধা মিকিরজান জানান, বিয়ের পর স্বামী-সন্তান নিয়ে তিনি সুখেই ছিলেন। কিন্তু একদিন পেটের ব্যথার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে তার স্বামী ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এরপর অন্যের বাড়িতে কাজ করে দুই সন্তানের লালন পালন করতেন। কিন্তু সেই ট্রেনের নিচে পড়ে তার মেয়েটাও মারা যায়। এর কয়েক বছর পর ছেলেটাও অসুস্থ হয়ে মারা যায়। তারপর থেকে তিনি একা। আশ্রয় নিয়েছেন গ্রামের ফাতেমা বেগমের বাড়িতে।

এছাড়া বার্ধক্যজনিত নানারোগে গত ১০ বছর আগে পা দুটো অচল হয়ে গেলে কাজের শক্তি হারিয়ে ফেলেন মিরিকজান।

এদিকে মিরিকজান জরাজীর্ণ টিনের যে ঘরটিতে থাকেন তা নিয়মিত পরিষ্কার না করায় ঘরের বেড়ায় মাকড়সার জালে ভরে গেছে। চালের ফুটো দিয়ে বৃষ্টি পড়ে মেঝেতে পানি জমেছে। ঘরের ভেতর ময়লা-আবর্জনা জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ওই ঘরের মাটিতে অর্ধ আবরণে পড়ে থাকেন বৃদ্ধা মিরিকজান। মাথার সাদা চুলে জট বেঁধেছে, ভাঁজ পড়েছে শরীরের চামড়ায়।

মিরিকজানের আশ্রয়দাতা ফাতেমা বেগম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমিই মিরিকজানের দেখাশোনা করি। তবে গ্রামের অনেক মানুষ তাকে খাবার দেয়। তবে কিছুদিন আগে তিনি একটি হুইল চেয়ার পেয়েছেন।’

অপরদিকে সব হারানো বৃদ্ধা মিকিরজানের খবর জানতে পেরে বুধবার দুপুরে গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যান চকপাড়া গ্রামে গিয়ে মিরিকজানের খোঁজ-খবর নিয়ে নতুন ঘর নির্মাণের জন্য অনুদানের টাকা তুলে দেন। এ সময় নতুন ঘর পাওয়ার আনন্দে মিরিকজান কান্নায় ভেঙে পড়েন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারহানা করিম বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসন ও ডু সামথিং ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে মিরিকজানের জন্য নতুন ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। ঘর নির্মাণের পর প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রও আমরা করে দেব।’

উপজেলা চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন খান বলেন, ‘মিরিকজানের জন্য ঘর নির্মাণের জায়গা পরিদর্শন করেছি। মিরিকজানের আত্মীয়-স্বজন কেউ না থাকায় ঘর নির্মাণের দায়িত্ব প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম মিন্টুকে দেয়া হয়েছে। আবহাওয়া ভালো হলেই ঘর নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’

(ঢাকাটাইমস/১৭জুলাই/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :