কুড়িগ্রামে বানভাসীদের কাছে তোলা হচ্ছে ঋণের কিস্তি

প্রকাশ | ১৭ জুলাই ২০১৯, ২২:৩২

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

কুড়িগ্রামে বানভাসীদের কাছ থেকে জোর করে এনজিওর ঋণের কিস্তি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রশাসন থেকে দুর্যোগকালে ঋণ কার্যক্রম বন্ধ রাখতে পরামর্শ দেয়া হলেও তা মানছে না তারা। উল্টো সিনিয়র অফিসারদের নির্দেশ পালন করছে বলে মাঠকর্মীরা সাফ জানিয়ে দেন।

বুধবার দুপুরে সরজমিন ভেরভেরী বাঁধে গিয়ে দেখা গেছে, বাঁধের উত্তর দিকে বইছে প্রমত্তা ধরলা নদী। নদী সংলগ্ন বাড়িগুলোতে কোমড় সমান পানি। লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে একজন মাঠকর্মী দলের সদস্যদের কাছ থেকে সাপ্তাহিক কিস্তি তুলছে। লোকজন বলছে, টাকা নেই পরে দেব। কিন্তু মাঠকর্মী নাছোড়বান্দা। কিস্তি না নিয়ে যাবেই না।

এখানে কথা হয় আর্জিনার সাথে। তিনি জানান,আমাদের ২৪ জনের একটি গ্রুপ আছে। নাম ময়না। এদের অনেকেই পানিবন্দি। কাজকর্ম না থাকায় টাকা দিতে পারছে না কেউই। কিন্তু মাঠকর্মী সেসব কথা শুনছেন না।

গ্রামের ইদ্রিসের স্ত্রী জোসনা জানান, স্বামী কুমিল্লায় রাস্তার কার্পেটিং-এর কাজ করতে গেছে। তারও কামাই নাই। শেষে হাওলাত করি বিকাশে ৫শ টাকা পাঠাইছে। সেই টাকাও দিলাম।

চায়ের দোকানদার এলাহী বকস জানান, বন্যার কারণে দোকানে বিক্রি-বাটা নাই। কিন্ত এরা তো মানুষের সুখ-দুঃখ বোঝে না। টাকা যেখান থেকে পারো আনতে বলে।

কৃষক হক সাহেব জানান, মুই কইছং টেকা দিবের পাবার নং। মোক খাঁইয়ো ধার দিবের চায় না। কামাই নাই। মুই এ্যালা টাকা পাং কোটে।

এরকম পরিস্থিতিতে নির্বিকারভাবে টাকা তুলছিলেন বেসরকারি আশা এনজিওর সিনিয়র লোন অফিসার বনি আমিন। তাকে বন্যার সময়ে কিস্তি না তোলার ব্যাপারে কথা বললে তিনি জানান, অফিসের আদেশে এসেছি। কোন চাপ দেয়া হচ্ছে না। আপনারা আমাদের ম্যানেজারের সাথে কথা বলেন। আমি তার নির্দেশে এসেছি।

এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান জানান, এখানে বেশ কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাদের বন্যার সময়ে কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু তারা যদি মানুষের দুর্ভোগের মধ্যে এমন কাজ করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কুড়িগ্রামে ব্র্যাক, আশা, টিএমএসএস, এসকেএস ফাউন্ডেশন, আরডিআরএস, ট্রিপলএস, সলিডারিটিসহ বেশ কয়েকটি এনজিও ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

(ঢাকাটাইমস/১৭জুলাই/এলএ)