জামালপুরে বন্যার অবনতি, ত্রাণের জন্য আকুতি

প্রকাশ | ১৮ জুলাই ২০১৯, ১৮:২৭

সাইমুম সাব্বির শোভন, জামালপুর থেকে

যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বানভাসী মানুষের অভিযোগ, অনেকেই এখনও কোনো ত্রাণ সামগ্রী পাননি। তবে যে ত্রাণ আসছে তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম বলে দাবি করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। আর ত্রাণ বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানোর আশ^াস দিয়েছে প্রশাসন।

এদিকে ১৯৮৮ সালের বন্যার সময়ের রেকর্ড ভেঙে বৃহস্পতিবার যমুনার পানি বিপৎসীমার ১৬৬ সে. মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বন্যার অবনতি হওয়ায় গবাদি পশুর খাবার নিয়েও বিপাকে পড়েছেন বানভাসী মানুষ।

গত বুধবার মাদারগঞ্জ উপজেলার চরনাদাগাড়িতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

এছাড়াও বিভিন্নস্থানের রেল লাইন বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ রেলপথ এবং জামালপুর-তারাকান্দি-বঙ্গবন্ধু সেতু রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

উপজেলা সদরের সাথে আন্ত ইউনিয়নের সমস্ত সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বন্যা কবলিতরা। এ পর্যন্ত বন্যার পানিতে ডুবে চারজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে ১৮ হাজার ২০৩ হেক্টর জমির ফসল। বন্যার্তদের চিকিৎসা সহায়তায় গঠন করা হয়েছে ৮০টি মেডিকেল টিম। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে প্রায় ৪০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্যার পানির তোড়ে পুরো জেলার ৪৪১৬টি মৎস্য খামারের ২১ কোটি টাকার অধিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ।

জেলা প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী জেলার ৬৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৯টি ইউনিয়ন এবং ৮টি পৌরসভার মধ্যে ৭টি পৌরসভা বন্যা কবলিত হয়েছে। পুরো জেলায় ৯০ হাজার ১৩০টি পরিবারের ৪ লাখ ৪৩ হাজার ১৮০জন পানিবন্দি রয়েছেন।

এদের একটি অংশ ৩৭টি আশ্রয়কেন্দ্র আশ্রয় গ্রহণ করলেও অধিকাংশ বানভাসীরা বিভিন্ন পাকা সড়ক, ব্রিজ ও উঁচু স্থানে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন।

এসব বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গবাদি পশুর খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি মানুষের অভিযোগ অনেকেই এখনও কোন ত্রাণ সামগ্রী পাননি।

এ বিষয়ে ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জানান, সরকারিভাবে যে পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী দেয়া হচ্ছে তা ২৫ ভাগ মানুষে কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে। ৭৫ ভাগ মানুষই বঞ্চিত হচ্ছে। তাই তিনি ত্রানের পরিমাণ বৃদ্ধির দাবি জানান।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ পর্যন্ত বন্যার্তদের জন্য ৭৮০ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। ত্রাণের বরাদ্দের পরিমাণ আরো বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক আহমেদ কবির।

ঢাকাটাইমস/১৮জুলাই/ইএস