ভূঞাপুরে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

প্রকাশ | ১৮ জুলাই ২০১৯, ১৯:৫৬

ফরমান শেখ, ঢাকাটাইমস

উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি ও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার অংশে। এতে করে উপজেলার গাবসারা, গোবিন্দাসী, অর্জুনা ও নিকরাইল ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে।

ভাঙন এলাকার মধ্যে রয়েছে খানুরবাড়ী, কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া, চিতুলিয়াপাড়া, চরচিতুলিয়া, বাসুদেবকোল, রামাইল, রুলীপাড়া, রাজাপুর, ডিগ্রিরচর, তাড়াই, চর তাড়াই, কুঠিবয়ড়া, কোনাবাড়ী, নলছিয়াসহ অর্ধশত গ্রাম।

এদিকে গোবিন্দাসী বাজারে বন্যার পানি প্রবেশ করায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ী ও যমুনা চরাঞ্চলের বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ। পানিবন্দি হওয়ায় দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্য সংকট। বাড়ছে পানিবাহিত রোগ।

যমুনার এ ভাঙনে গৃহহীন হয়ে পড়েছেন কয়েকশ পরিবার। বসতভিটা হারিয়ে অনেকেই রাস্তার দুই পাশে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তীব্র পানি বৃদ্ধি হওয়ায় গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পানিবন্দিরা। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

এদিকে গত বুধবার রাত ১২টার দিকে তাড়াই গ্রামের রাস্তা ও বৃহস্পতিবার দুপুরে ভূঞাপুর পৌর এলাকার টেপিবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ ভেঙে বাহাদীপুর, টেপিবাড়ী, বেতুয়া, কুতুবপুর ও পলশিয়াসহ প্রায় ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। হুমকিতে রয়েছে ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়ক। তাড়াই গ্রামের বাঁধ ভাঙনের ফলে পানির নিচে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি ও আমন ধানের বীজতলা।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইল অংশে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আরো দুই-একদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।

ইউনিয়নের রেহাইগাবসারা গ্রামের পানিবন্দি হওয়া রহমান শেখ জানান, উপজেলার গাবসারা চরাঞ্চলের যমুনার বানের পানিতে পুরোটাই তলিয়ে গেছে। এই অসময়ে বন্যা ও বৃষ্টির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছি। ঘরে পানি প্রবেশ করায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং গো-খাদ্য সংকটে পড়েছি। এখন পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি কোনো সংস্থা থেকে ত্রাণ সহায়তা পাইনি।

জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোশারফ হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত যমুনা নদীর বন্যায় বড় ধরনের কোনো ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। বন্যাকবলিত মানুষদের জন্য ২০০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ তিন লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। তা বিতরণ প্রক্রিয়ায় রয়েছে। আরো ৩০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৮জুলাই/প্রতিনিধি/এলএ)