সাহিত্যের বরপুত্রের চলে যাওয়ার সাত বছর

প্রকাশ | ১৯ জুলাই ২০১৯, ০৯:২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

তাকে বলা হয় বাংলা সাহিত্যের বরপুত্র। তিনি দেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও নির্মাণের মহান কারিগর। গল্প, নাটক, সিনেমায় ছিল তার বসবাস। গানের দুনিয়াতেও কম সাড়া ফেলেননি তিনি। চিত্রকলা কিংবা মঞ্চ নাটকেও দাগ রেখেছেন যথেষ্ট। শিশুদের জন্যও কাজ করে গেছেন উল্লেখযোগ্য। তাকে অস্বীকার করার, ভুলে থাকার কোনো সুযোগ নেই বাঙালির। তিনি হুমায়ূন আহমেদ। আজ তার মৃত্যুবার্ষিকী। তার চলে যাওয়ার সাত বছর পূর্তি হচ্ছে আজ। তবে তিনি রয়ে গেছেন শত-সহস্র ভক্ত-অনুরক্তের হৃদয়ে।

১৯ জুলাই ২০১২ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুবরণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। নিকট ইতিহাসে আর কোনো সাহিত্যিকের মৃত্যু এভাবে দাগ কাটেনি, যেমনটা এ কথাসাহিত্যিকের বিদায়বেলায় হয়েছিল।

১৯৪৮ সালে জন্ম নেওয়া হুমায়ূন বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেই লেখালেখি শুরু করেন। লেখা দিয়ে সাহিত্য সমালোচকদের মনোযোগ আকর্ষণ করেন তিনি। নন্দিত নরকে তার প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস। এরপর শঙ্খনীল কারাগার, রজনী, এপিটাফ, পাখি আমার একলা পাখি, ফেরা, নিষাদ, দারুচিনি দ্বীপ, নির্বাসন, অমানুষ, রূপালী দ্বীপ, শুভ্র, দূরে কোথাও, মন্দ্রসপ্তক, বাদশাহ নামদার, সাজঘর, বাসর, নৃপতির মতো পাঠক হৃদয় জয় করা উপন্যাস আসে তার লেখনিতে।

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘জোৎস্না ও জননীর গল্প’, ‘১৯৭, ‘সূর্যের দিনের মতো’ উপন্যাস। হুমায়ূনসৃষ্ট মিসির আলী ও হিমু হয়ে উঠে পাঠকদের প্রিয় চরিত্র। ‘অনন্ত নক্ষত্র বীথি’, ‘ইরিনা’র মতো কয়েকটি কল্পবিজ্ঞান কাহিনিও লিখেছেন তিনি।

৮০ এর দশকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘এইসব দিনরাত্রি’ দিয়ে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে যান তিনি। এরপর বহুব্রীহি, অয়োময়, কোথাও কেউ নেই, নক্ষত্রের রাতের মতো জনপ্রিয় নাটকও আসে তার হাত দিয়ে। নাটক লেখার এক পর্যায়ে নির্দেশনায়ও নামেন হুমায়ূন। নাটক নির্দেশনায় হাত পাকিয়ে নামেন চলচ্চিত্র পরিচালনায়। আগুনের পরশমনি দিয়ে শুরু করে শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, শ্যামলছায়ার মতো চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন তিনি। তার পরিচালিত সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ও মানুষের কাছে বেশ প্রশংসা কুড়ায়।

হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যু দিবস উপলক্ষে তার পরিবারের পক্ষ থেকে গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে রয়েছে নানা আয়োজন। নুহাশপল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল জানান, দিনটি উপলক্ষ্যে সকাল থেকে কোরআনখানির আয়োজন করা হয়েছে। সেইসঙ্গে তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। দুপুরে এলাকার শিশুদের খাওয়ার আয়োজন রয়েছে। এছাড়া প্রকাশকরা নুহাশপল্লীতে কথাশিল্পীকে শ্রদ্ধা জানাবেন বলে জানা গেছে।

(ঢাকাটাইমস/১৯জুলাই/জেবি)