সন্ত্রাস ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি

মাসুদ কামাল
 | প্রকাশিত : ১৯ জুলাই ২০১৯, ১৪:০১

জুনের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু করে জুলাইয়ের প্রথম কয়েকদিনের তিনটি ঘটনার কথা বলবো। এ সময়ে দেশে ঘটনা যে মাত্র তিনটিই ঘটেছে, তা কিন্তু নয়। আরও অনেক আছে। তবে আলোচনার জন্য তিনটিই যথেষ্ট।

প্রথমটি অবশ্যই বরগুনার রিফাত হত্যার ঘটনা। গত ২৫ জুন বরগুনা শহরে দিনেদুপুরে প্রকাশ্য রাস্তায় তার স্ত্রীর সামনে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করে কয়েকজন যুবক। স্ত্রী তার স্বামীকে বাঁচাতে চেষ্টা করে, খুনিদের হাত ধরে টানাটানি করে, কিন্তু ব্যর্থ হয়। রাস্তায় সে সময় বেশ কিছু লোকজন ছিল, তারা কেউই রিফাতকে বাঁচাতে এগিয়ে যায়নি। তবে কেউ একজন পুরো ঘটনাটি ভিডিও করে এবং সেটি ফেসবুকে আপ করে দেয়। আর এতেই দেশজুড়ে শুরু হয়ে যায় হইচই। এ ধরনের ঘটনায় যাদের চুপ করে থাকার অভ্যাস, তারাও যেন নড়াচড়া করতে বাধ্য হয়। দ্রুতই মামলা হয়, বেশ কয়েকজন আসামি ধরাও পড়ে। প্রধান তিন আসামি, যারা দা দিয়ে সরাসরি কুপিয়েছিল, তাদের মধ্যে দু’জন গ্রেফতার হয়। একজন আবার ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারাও যায়। নিহত এই খুনির নাম নয়ন বন্ড। ‘বন্ড’ অবশ্য তার পিতামাতার দেয়া নাম নয়। কল্পচরিত্র জেমস বন্ডের আদলে সে এই নামটা নিজেই গ্রহণ করেছে, ০০৭ নামে একটি হোয়াটসআপ গ্রুপও তৈরি করেছে। খুনের আগের দিন এই গ্রুপের মধ্যে মেসেজ চালাচালি করে তারা পুরো অপকর্মের পরিকল্পনাও করেছে।

এই ঘটনার পর ধীরে ধীরে অনেক কিছুই বের হতে শুরু করে। জানা যায়, প্রধান আসামিদের একজন জেলার প্রভাবশালী এক আওয়ামী লীগ নেতার আত্মীয়। এই গ্রুপটি এর আগেও অনেক অপকর্ম করেছে, সেসব নিয়ে মামলা মোকদ্দমাও হয়েছে, কিন্তু ওই খালুর কারণে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি। বিষয়টি নিয়ে এতটা হইচই না হলে এবারও হয়তো কিছুই হতো না। হয়তো তারা আরও দাপটের সঙ্গে দাপিয়ে বেড়াতো।

দ্বিতীয় ঘটনাটি চট্টগ্রামের। ৩০ জুন সন্ধ্যার দিকে যুবলীগ কর্মী মোহাম্মদ মহসিন হেঁটে হেঁটে বাসায় ফিরছিলেন। এ ঘটনাটিরও একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে। সেখানে দেখা যায় সরু একটা গলি দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে একজন। হঠাৎ পিছন দিয়ে বেশ কয়েকজন যুবক দৌড়ে আসে। তারা মহসিনকে মারতে থাকে লাঠি বা রড দিয়ে। শুরুর দিকে নিরস্ত্র মহসিন মৃদু প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও দ্রুতই সে নিস্তেজ হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। তারপরও মার থামে না। মৃদু নড়াচড়ায় মারতে অসুবিধা হচ্ছিলো দেখে একজন মাটিতে পড়ে থাকা মহসিনের পা চেপে ধরে, তারপর বীর পুঙ্গবরা হাতের লাঠি বা রড নিয়ে বীরত্ব দেখাতে থাকে। পুরো দৃশ্যটা ভয়াবহ, দেখা যায় না। একজন মানুষকে এভাবে কয়েকজন মানুষ মিলে পিটাতে পারে! দেখতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। এ দৃশ্য রিফাতকে কোপানোর দৃশ্যের চেয়ে কোনো অংশ কম নয়। পার্থক্য কেবল- এ ঘটনায় মহসিনের মৃত্যু হয়নি। তবে মারাত্মক আহত অবস্থায় সে এখন হাসপাতালে।

মহসিনকে কে মারলো? এ ঘটনায় দৃশ্যের ভিডিওটা রিফাতের ঘটনার মতো অতটা স্পষ্ট নয়। চেহারাগুলো ঠিক চেনা যায় না। কিন্তু মহসিন তো এখনো জীবিত, সে হামলাকারীদের ঠিকই চিনতে পেরেছে। সে তাদের নামও বলেছে। সেই সব নাম এবং মহসিনের বক্তব্য থেকে ঠিকই ধারণা করা গেছে কে রয়েছে এতসব ঘটনার পেছনে। কেন ঘটেছে এইসব অপকর্ম তাও আর অজানা নেই। মহসিন তো যুবলীগ কর্মী। সে যে দলের হয়ে কাজ করে, কিংবা যে দলের পরিচয় দেয়, তারাই তো আজ রাষ্ট্রক্ষমতায়। তাহলে তাকে কেন এভাবে মার খেতে হবে? মহসিনের বক্তব্য আর এলাকাবাসীর কথাবার্তা যতটুকু বিভিন্ন মিডিয়াতে এসেছে, তা থেকে উপলব্ধি করা যায়- এই ঘটনার পেছনে রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরই আর একটি গ্রুপ।

তাহলে অর্থটা কি দাঁড়াচ্ছে? আওয়ামী লীগ পিটাচ্ছে আওয়ামী লীগকে! কিন্তু কেন? একই আদর্শের সমর্থকদের মধ্যে কেন এই মরণঘাতি বিরোধ? দোষ কি আদর্শের? নাকি অনুসারী নামে যারা আছে তারা আসলে অনুসারীই নয়? দলীয় সাধারণ সম্পাদক অবশ্য অনেকবারই বলেছেন- তাদের ঘরে নাকি কিছু ‘কাউয়া’ ঢুকে পড়েছে। তাহলে কি এই অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে? মাঝে একবার শুনলাম- এমন অনুপ্রবেশকারীদের দল থেকে বের করে দেয়া হবে। সেটা কবে হবে? যত দেরি করবেন, ততই আপনাদের ইজ্জত যেতে থাকবে। কারণ, বের করে দেয়ার আগে পর্যন্ত তো অফিসিয়ালি তারা আপনাদেরই লোক। তাদের অপকর্মের দায়-দায়িত্ব আপনাদেরকেই নিতে হবে।

তৃতীয় ঘটনাটিও চট্টগ্রামের। এটি ঘটেছে গত ২ জুলাই। চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউএসটিসি’র প্রবীণ এক অধ্যাপকের গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেয় এক ছাত্র। এর আগে তাকে হেনস্তা করে, পেছন থেকে ধাক্কা দেয়, তারপর গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেয়। শেষ ধাপ, অর্থাৎ আগুন লাগানোর কাজটি অবশ্য তারা করতে পারেনি। এখানে কিন্তু একজন মাত্র ছাত্র ছিলো না, বেশ কয়েকজন ছিল। ঘটনাটি গোপন থাকেনি, দ্রুতই মিডিয়াতে চলে আসে। বিবেকবান মানুষ স্তম্ভিত হয়ে যায়। প্রতিবাদে অনেকে বিবৃতি দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে চারজন দোষী সাব্যস্ত হয়। একজনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়, অপর তিনজনকে বহিষ্কার করা হয় এক বছরের জন্য। এগুলো হলো ঘটনা। কিন্তু এই ঘটনাগুলো ঘটলো কেন? ঘটনার পেছনে কি আর কিছু নেই? কেবল চারজন ছাত্রই করেছে এতকিছু, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন- সবই কি এই চারজনই করেছে? এদের পেছনে ইন্ধনদাতা কি কেউ ছিলো না?

আসলে এই প্রশ্নগুলো গুরুত্বপূর্ণ। এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়াও জরুরি। বিভিন্ন পত্রিকা এবং মিডিয়াতে এ সংক্রান্ত যে সকল তথ্য পাওয়া যায়, সেগুলোকে ধারাবাহিকভাবে সাজালে ঘটনার মোটামুটি একটা চিত্র পাওয়া যায়। প্রায় ৪০ বছর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার পর ইউএসটিসি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে যোগ দেন অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদ। বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেয়ার পর তিনি ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার মান উন্নত করার লক্ষ্যে কয়েকজন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করেন এবং নতুন কয়েকজনকে নিয়োগ দেন। পাশাপাশি ইংরেজি বিভাগের বেশ কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ক্লাস উপস্থিতি বিবেচনায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারান। চাকরিচ্যুত ওই শিক্ষকদের ইন্ধনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ হারানো শিক্ষার্থীরা এই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে মাঠে নামেন। আর মজার ব্যাপার হলো- এই কাজে তারা সমর্থন পেয়েছে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের একাংশের। বিক্ষুব্ধ এই ছাত্ররা কিন্তু শিক্ষা উপমন্ত্রী, যিনি আবার চট্টগ্রামেরই মানুষ, এর কাছে গিয়েছিলেন। বিভাগের ২৬৫ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে থেকে ২২ ছাত্রের স্বাক্ষর সংবলিত একটি অভিযোগপত্রও ছিল সেখানে। অভিযোগে বলা হয়েছে- আলোচিত অধ্যাপকের শিক্ষাদান পদ্ধতি নাকি ঠিক নয়, ওখানে নাকি ক্লাসের ছাত্রীদেরকে যৌন হেনস্তার প্রবণতা রয়েছে। শিক্ষা উপমন্ত্রীর কাছে ওই ছাত্রদেরকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও ছাত্রলীগের একাংশের ভূমিকা ছিল। উপমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি তদন্তের জন্য দায়িত্ব দিলেন পুলিশকে। একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, যার শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা ৪০ বছর, তার শিক্ষাদান পদ্ধতি সঠিক কি না- সেটা বিচারের জন্য পুলিশকেই সঠিক বিবেচনা করলেন সরকারের একজন উপমন্ত্রী!

যে তিনটি ঘটনার কথা এখানে উল্লেখ করা হলো- এর মধ্যে একটা মিল কিন্তু সহজেই চোখে পড়ে। তিনটি ঘটনার সঙ্গেই কোনো না কোনোভাবে উচ্চারিত হচ্ছে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নাম। রিফাতের ঘটনায় সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দাতা হিসাবে, মহসিনের ক্ষেত্রে সরাসরি আক্রমণকারী হিসাবে এবং অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদের ক্ষেত্রে প্ররোচনাকারী হিসাবে। এরা সবাই কি অনুপ্রবেশকারী? অথবা কেউ কেউ হয়তো বলবেন- আওয়ামী লীগ বড় দল। এত বড় দলে সকলের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব হয় না। এমন কথা একেবারে অমূলক নয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে- নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা কি হয়েছে? দল যত বড়ই হোক- নিয়ম নীতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা যদি থাকে, নিয়ম ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের রীতি যদি থাকে, তাহলে দুষ্টকর্ম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা যায়। তেমনটি কখনো কি করা হয়েছে? রিফাত হত্যার ক্ষেত্রে যে জেলা পরিষদ কর্মকর্তার নাম এসেছে, মহসিনকে প্রহারের ক্ষেত্রে যে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সরাসরি ভূমিকার কথা উচ্চারিত হয়েছে, কিংবা অধ্যাপক মাসুদের ক্ষেত্রে যে ছাত্রলীগ নেতাদের প্ররোচনার কথা উচ্চারিত হয়েছে- তাদের কারও বিরুদ্ধেই কিন্তু এখন পর্যন্ত ন্যূনতম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গৃহীত হয়নি। বহাল তবিয়তে, আগের মতোই দাপটের সঙ্গে বিরাজ করছেন তারা নিজ নিজ এলাকায়।

ইদানীং একটা কথা প্রায়ই উচ্চারিত হয়- ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি।’ এটি সম্ভবত একেবারে বায়বীয় কোনো টার্ম নয়। এলাকায় কোনো অঘটন ঘটলে দ্রুতই সাধারণ মানুষ এই বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে। তারা শুরুতেই কেন যেন ধরে নেয়- যেহেতু এই ঘটনার পেছনে অমুক জড়িত আছে, তাই এর আর কোনো বিচার হবে না। কদিন পর যখন দেখা যায়, অপরাধী বুক ফুলিয়ে প্রকাশ্যে আবার ঘুরে বেড়াচ্ছে, তখন তারা বুঝতে পারে, আসলেই বুঝি তেমন কোনো কালচারের মধ্যে তাদেরকে বসবাস করতে হচ্ছে।

উদাহরণ হিসাবে, ঠিক এক বছর আগের একটা ঘটনার কথা স্মরণ করা যেতে পারে। গত বছরের এই জুলাই মাসেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হাতুড়ি পিটার ঘটনা। দেশে তখন কোটাবিরোধী আন্দোলন। এ আন্দোলনে নেতৃত্বে থাকা সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতা তরিকুল ইসলামকে প্রকাশ্যে রাস্তায় হাতুড়ি পেটা করে ছাত্রলীগের নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন। হাতুড়ি দিয়ে তরিকুলের পিঠে এবং পায়ে পেটানোর সেই দৃশ্য গোপন ক্যামেরায় নয়, বিভিন্ন টেলিভিশনের ক্যামেরায় ধারণ করা হয়। অনেক টেলিভিশনে তা দেখানো পর্যন্ত হয়। কিন্তু কি প্রতিকার হয়েছে এ ঘটনার? মামুনকে কি গ্রেফতার করা হয়েছে? তার কোনো বিচার করা হয়েছে? বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কি তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে? আমি তো কোথাও সেরকম কিছু শুনিনি। ইউএসটিসিতে অবশ্য যে ছেলেটি কেরোসিন ঢেলেছিল, স্নাতকোত্তর শ্রেণির সেই ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই ছেলেটি যদি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতুড়িধারী মামুনের মতো সরাসরি ছাত্রলীগ করতো, তাহলেও কি তার বিরুদ্ধে এরকম ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হতো?

অথবা ধরা যাক ইউএসটিসি’র সেই সব ‘সুবিধাবঞ্চিত’ শিক্ষকের কথা, নিজেদের প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য যারা ছাত্রদের ব্যবহার করেছে, প্ররোচিত করেছে; তাদেরও কি কোনো ধরনের সাজার আওতায় আনা হবে? আনা যাবে?

বরগুনার ঘটনায় অনেকে বলছেন- ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নয়ন বন্ড আসলে মারা যায়নি, তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে, যাতে ঘটনার পেছনে যারা কলকাঠি নাড়িয়েছে তাদের নাম প্রকাশ না হয়। আমার মনে হয়- এমন ধারণা ঠিক নয়। বরং পেছনের মদতদাতাদের পরিচয় নিয়ে কারও তেমন কোনো মাথা ব্যথা আছে বলেও মনে হয় না। সবাই জানে আশ্রয়দাতা কে? বরং উল্টো একটা চিন্তা বেশ প্রচারিত হচ্ছে। বলা হচ্ছে- আশ্রয়দাতার জোর আছে বলেই খালুর ভাগ্নে এখনো জীবিত আছে, বরং তুলনামূলক কম প্রয়োজনীয় নয়ন বন্ডকে কুরবানি দেয়া হয়েছে। এমনিতে ক্রসফায়ার বা তথাকথিত ‘বন্দুকযুদ্ধ’ নিয়ে সচেতন মানুষের মধ্যে নানা নেতিবাচক মতামত থাকলেও নয়ন বন্ডের মৃত্যু নিয়ে কাউকে তেমন হা-হুতাশ করতে দেখা যায়নি। একই সঙ্গে যদি অপর দুই খুনিকেও নিকেশ করে দেয়া হতো- তাহলেও ইতর বিশেষ হতো না। কিন্তু বাস্তবে সেরকম কিছু হয়নি। ভাগ্নেকে বরং বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। মামলার দীর্ঘসূত্রতা এবং আইনের মারপ্যাঁচের ধারাবাহিকতায় কিছুদিন পরই হয়তো তাকে আবার দেখা যাবে আরও বেশি দাপটের সঙ্গে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করতে। এই দেশে সবই সম্ভব।

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :