সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে আছে সমাধান!

প্রকাশ | ১৯ জুলাই ২০১৯, ১৫:৫৫

ওমর আলী

দেশে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় আছে, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাজ কী সেটাই হয়তো জানে না ওই মন্ত্রণালয়ে কাজ করা জনগণের ভ্যাটের টাকায় বেতন নেয়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আমলা এবং ওই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সাহেবরা। স্বাধীন বাংলাদেশে যদি এই মন্ত্রণালয়ে সঠিকভাবে তাদের কাজ করতো তাহলে স্বাধীনতার এত বছর পর এসে রাস্তায় ভিক্ষুক থাকার কথা নয়, প্রতিবন্ধী সন্তানের জন্য মা বাবার চিন্তা করতে হতো না, সমাজের তৃতীয় লিঙ্গ আমরা বাংলা ভাষায় যেটাকে হিজরা বলে থাকি এদের কাছে নাজেহাল হতে হতো না জনগণের। সবার যদি পরিকল্পনামাফিক পুনর্বাসন হতো তাহলে দেশের কোনো বাবা-মায়ের চিন্তা করতে হতো না প্রিয় সন্তানের জন্য।

সারাদেশে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে প্রতিটি বাবা-মায়ের মনের ভেতরে। কীভাবে সমাধান করা যায় এই সমস্যা সেটা জানেন না এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব ও কর্মকর্তা কর্মচারী। আপনি ৩০/৪০ বছর রাজনীতি করে এমপি-মন্ত্রী হয়েছেন, আপনারা মন্ত্রণালয়ের কাজ কী সেটাই জানেন না! শুধু টাকা আয়ের কারখানা মনে করে বসে আছেন। আপনি আমলা, মেধাবী ছাত্র ছিলেন, সরকারি চাকরি করেন, সরকারি নানা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে এই মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে আছেন আপনি, অথচ জানেন না দেশ ও সমাজের জন্য কী করলে দেশ ও সমাজের উপকার হবে।

আপনি তো বই পড়ে মেধাবী হয়েছেন, জ্ঞান অর্জন করে না। এই সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হাজার হাজার লোক চাকরি করেন তাদের কাজ কী? বর্তমান সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে যে কাজ করে তা দিয়ে দেশে ও সমাজের শূন্য পরিমাণ উপকার হয় না। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় যদি সঠিক পরিকল্পনামাফিক কাজ করতো তাহলে ছোট ছোট বাচ্চা চুরি হতো না। ছোট ছোট বাচ্চা চুরি করে দেশের এক শ্রেণি মানুষ এই বাচ্চাদের হাত পা কেটে চোখ অন্ধ করে দিয়ে নানাভাবে শারীরিক অসহায় প্রতিবন্ধী করে রাস্তায় ভিক্ষাবৃত্তি ব্যবসা শুরু করেছে অনেক বছর ধরে। এসব প্রতিবন্ধী মানুষ যদি সরকার তাদের ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় নিয়ে এসে তাদের পুনর্বাসন করতে পারে। আর কিছু বাচ্চা পাচার হয়, সেইগুলো যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বন্ধ করতে পারে, তাহলে নিশ্চিত চিন্তামুক্ত থাকতে পারবে বাচ্চার বাবা-মায়েরা।

রাস্তাঘাট, বাসায় মাঝে মাঝে তৃতীয় লিঙ্গের (হিজরা)  লোকদের কাছে নাজেহাল হতে হয় জনগণের। এই তৃতীয় লিঙ্গ মানুষগুলোকে যদি তাদের কাজের ব্যবস্থা করে দেয়া যায়, তাহলে যারা তৃতীয় লিঙ্গ দিয়ে চাঁদাবাজি ভিক্ষাবৃত্তি ব্যবসা শুরু করেছে সেটা বন্ধ হবে এবং জনগণ নাজেহাল থেকে রক্ষা পাবে। আমি আবুধাবিতে অনেক দেখছি অনেক দেশের হিজরা এখানে সাধারণ মানুষের সাথে একসঙ্গে কাজ করে, কোনো সমস্যা নেই। আমাদের দেশে হবে না কেন।

যেসব বাবা-মায়ের প্রতিবন্ধী সন্তান আছে কতটা অসহায় জীবন-যাপন করছে তারা, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। সন্তান ভালো হোক আর প্রতিবন্ধী হোক বাবা মায়ের আদরের কমতি থাকে না কারো প্রতি। বাবা-মায়ের বয়স যত বাড়তে থাকে তাদের চিন্তা তত বাড়তে থাকে। বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর এই প্রতিবন্ধী সন্তানের কী হবে, কে দেখাশোনা করবে, হাজার প্রশ্ন প্রতিনিয়ত আঘাত করতে থাকে বাবা-মায়ের বুকে। এইগুলোর সমাধান করার কিছু পরিকল্পনামাফিক কাজ করতে হবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে। কাজগুলো সঠিকভাবে করতে পারলে ইনশাআল্লাহ তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে, যদি কোনো দুর্নীতি না হয়। সমাধানের জন্য মন্ত্রণালয় দেশের জনগণের সাথে কথা বলতে পারে। এমনকি আমাদের মতো ক্ষুদ্র মানুষের সাথে কথা বলতে পারে দেশের স্বার্থে।

লেখক: আবুধাবি প্রবাসী