দু’তিন মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর

ঢাকা টাইমস ডেস্ক
| আপডেট : ১৯ জুলাই ২০১৯, ২০:৫২ | প্রকাশিত : ১৯ জুলাই ২০১৯, ২০:৪৬

মিয়ানমারের নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের একটি দলকে আগামী দু’তিন মাসের মধ্যে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তর করা হবে। তবে তার আগে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক দূতাবাস (ইউএনএইচসিআর) সেখানে পরিদর্শন করবে। তাদের মত পেলে আর রোহিঙ্গারা যেতে আগ্রহী হলেই এ স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হবে।

যুক্তরাজ্যের দৈনিক পত্রিকা গার্ডিয়ানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম একথা জানিয়েছেন। সাক্ষাৎকারে ভাসানচরে রোহিঙ্গারা কিভাবে জীবিকা নির্বাহ করবে সে বিষয়েও কথা বলেন শাহরিয়ার আলম।

নোয়াখালীর চর উপজেলা হাতিয়ার সন্নিকটে মেঘনা নদীর বুকের ভাসানচরে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরে সরকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে সেখানে এরইমধ্যে বেশ কিছু বাড়িঘর নির্মাণ শেষ হয়েছে। এছাড়া বেড়িবাধ নির্মাণ, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নও প্রায় শেষ পর্যায়ে।

তবে ভাসানচরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্থানান্তর নিয়ে বিভিন্ন জাতিংসঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নানা সময়ে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে একপ্রকার বিরোধিতাই করে আসছে। আর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, রোহিঙ্গা না চাইলে তাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করা হবে না।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘১০ মাত্রার ঘূর্ণিঝড় হলেও ভাসানচরে রোহিঙ্গারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এর আশাপাশ এলাকার বাংলাদেশের ২০ শতাংশ মানুষের ওপরেও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পরবে। অর্থাৎ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বাংলাদেশের জনগণ ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ওপরে সমানভাবে পড়বে। তাই ভাসানচরে দুর্যোগ নিয়ে চিন্তিত হওয়ারও কিছু নেই।’ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ভাসানচরে আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বাড়িঘুলো কেন্দ্র করে একেকটি পুকুর থাকবে। সেসব পুকুর থেকে মাছ ধরে তারা নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করবে। রোহিঙ্গাদের প্রথম দলকে সফলভাবে পুনস্থাপিত করা হলে, পরবর্তীকালে অন্য রোহিঙ্গাদেরও ভাসানচরে পুনস্থাপন করা হবে।’

২০১৬ সালে ৯ অক্টোবর আর ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের পুলিশ চৌকিতে কথিত আরসা নামের একটি সংগঠনের হামলার পর প্রদেশটির জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের ওপর কাঠামোবদ্ধ হামলা শুরু করে মিয়ানমারের বাহিনী।

নির্বিচারে হামলা, নিপীড়ন, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয় অনেক রোহিঙ্গাকে। প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশের দিকে ঢল নামে রোহিঙ্গাদের। টানা দু’তিন মাসের অব্যাহত রোহিঙ্গা আগমনে শরণার্থী সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় আট লাখের বেশি।

আর আগে থেকে কক্সবাজারে থাকা রোহিঙ্গাদের নিয়ে সে সংখ্যাটি ছাড়ায় ১২ লাখ। তাদের সবারই ঠাঁয় হয়েছে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে। এছাড়া বেশকিছু রোহিঙ্গা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। নানা সময়ে তারা পাসপোর্ট করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরাও পড়ছে।

এসব রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যেতে আগ্রহী নয় বলে গণমাধ্যমে উঠে আসছে। সে বিষয়ে শাহরিয়ার বলেন, ‘তাদের মধ্যে যারা যেতে আগ্রহী নয়, আমরা তেমন কোনও রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ভাসানচরে যাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করবো না।’

ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে সরকারের কোনও তাড়াহুড়ো নেই বলেও জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ভাসানচর পরিদর্শন শেষে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।

ঢাকাটাইমস/১০জুলাই/আরআর/ডিএম

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :