নানির ভিক্ষার টাকায় থানা থেকে ছাড়া পেলেন নাতি
প্রকাশ | ১৯ জুলাই ২০১৯, ২১:৫৮
অন্ধ নানির ভিক্ষার জমানো টাকায় পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পেলেন নাতি। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলা শহরের নিউটাউন এলাকা থেকে গোসল করার সময় মাদকের অজুহাতে এক রিকশাচালককে ধরে নিয়ে যান ভৈরব থানার এএসআই মাজাহার।
ভুক্তভোগী রিকশাচালকের নাম নূর মোহাম্মদ জুয়েল। বয়স ১৯ বছর। তাকে ধরে নিয়ে ভৈরব থানায় নয়, বরং থানার পেছনে রান্নাঘরে গোপনে আটক রাখা হয়।
পরে আটক জুয়েলকে ছাড়িয়ে নিতে তার স্বজনদের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
দাবিকৃত টাকা পরিশোধ করা না হলে ৫২টি ইয়াবা দিয়ে চালান করা হবে বলে হুমকি দেয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে মাজাহারের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী রিকশাচালক মুক্তির পর স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ করেন।
রিকশাচালক জুয়েল জানান, মা জরিনা বেগম ও অন্ধ নানি জোসনা বেগম থানার পেছনে ওই এএসআইয়ের সাথে দেখা করে হাতে পায়ে ধরেন জুয়েলকে ছেড়ে দেয়ার জন্য। কিন্তু দারোগার দাবিকৃত টাকা না দিলে স্বজনদের সামনেও ইয়াবা দিয়ে চালানের হুমকি দেয়া হয়।
অবশেষে জুয়েলকে ছাড়িয়ে নিতে ১৩ হাজার টাকা দেয়ার জন্য রাজি হন স্বজনরা। রাত ৯টার দিকে অন্ধ নানি জোসনা বেগম তার ভিক্ষার জমানো পাঁচ হাজার টাকা ও ঘরের জিনিস বিক্রি করে ১১ হাজার টাকা নিয়ে যান। বাকি দুই হাজার টাকা পরের দিন দেয়ার কথা বললে জুয়েলকে ছেড়ে দেয়া হয়।
পরদিন বুধবার জুয়েলের মা জরিনা বেগম থানার সামনে বাকি দুই হাজার টাকা দেন ওই দারোগার হাতে। এসব বিষয় থানার ওসি জানেন না বলেও জানান ভুক্তভোগী পরিবারটি।
বুধবার কয়েকজন স্থানীয় লোকজন ও সাংবাদিকদের বিষয়টি জানায় ওই পরিবার।
পরিবারটি বর্তমানে পুলিশি হয়রানির আতঙ্কে রয়েছে বলেও দাবি করে।
অভিযুক্ত এএসআই মাজাহার বলেন, ‘এটা তার ভুল হয়ে গেছে। আর কখনো এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না। তবে ১৩ হাজার টাকা নয়, মাত্র দুই হাজার টাকা নিয়েছেন বলে স্বীকার করেন তিনি।’
ভৈরব সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রেজওয়ান দিপু মুঠোফোনে বলেন, ‘এমন ঘটনা আগেও শুনেছি। ঘটনার দিন ফোন দিলে হয়তো হাতেনাতে ধরতে পারতাম। আসামি আটক করে থানায় নিয়ে আসবে, অন্য কোথাও নিয়ে রাখার কোন নিয়ম নেই। যাচাই-বাছাই করে ভাল হলে ছাড়া পাবে।’
তিনি ভৈরবের বাইরে থাকায় এসে বিষয়টি দেখবেন এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবগত করবেন বলে জানান।
(ঢাকাটাইমস/১৯জুলাই/এলএ)