রাতভর নাটকীয়তার পরে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে প্রিয়াঙ্কার সাক্ষাৎ

প্রকাশ | ২০ জুলাই ২০১৯, ১৯:১৭

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

রাতভর পুলিশের কাছে আটক থাকা কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন উত্তর প্রদেশে জমি নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের কয়েকজন।

শনিবার প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সাথে ক্ষতিগ্রস্ত দুটি পরিবারের আত্মীয়স্বজন দেখা করেন।  কিন্তু রাজ্য সরকার বাকি ১৫টি পরিবারের সঙ্গে প্রিয়াঙ্কার দেখা করার অনুমতি দেয়নি।

বারানসিতে জমির সংঘর্ষের ঘটনায় নারীসহ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ১৭টি পরিবার।
সাংবাদিকদের প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, ‘আমার সাথে ক্ষতিগ্রস্ত দুটি পরিবার দেখা করেছে। বাকি ১৫টি পরিবারকে এখানে আমার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেয়া হয়নি। এমনকি আমাকেও সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। গণমাধ্যমের উচিত সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা। যেন ক্ষতিগ্রস্তরা আমার সাথে দেখা করতে পারে। প্রশাসনের উচিত অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা।’
ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে দেখা করার পরে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী দিল্লি ফিরে যাবার কথা জানান।

ক্ষতিগ্রস্তদের দেখতে এসে শুক্রবার পুলিশের হাতে আটক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আলো-পানি ছাড়াই উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরের একটি গেস্ট হাউসে রাত কাটান। এ সময় কংগ্রেসের কর্মীরা তার সাথে ছিলেন।

৩৬ এক জমিকে কেন্দ্র করে গুজ্জার ও গন্ড সম্প্রদায়ের মাঝে সংঘর্ষের ওই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নারীসহ ১০ জন মারা যান ও ২৪ জন আহত হন। অভিযোগ রয়েছে, যোগী দত্ত নামের এক গ্রামপ্রধান জমি দখলে বাধা পেয়ে আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে গুলি ছোড়েন। গুলি ছোঁড়ার পাশাপাশি জমি দখলে ২০০ লোক ও ৩২ ট্রাক্টর ট্রলি নিয়ে আসেন।

সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ ২৪জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রামপ্রধান যোগী দত্তের ভাইসহ ৭৮জনকে আসামি করা হয়েছে। আর এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের দেখতেই দিল্লি থেকে উত্তর প্রদেশ রওনা দেন প্রিয়াঙ্কা।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, শুক্রবার রাতে রাজ্য সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা প্রিয়াঙ্কাকে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। কিন্তু প্রিয়াঙ্কা গান্ধী তাদের অনুরোধে রাজি হননি। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সাথে দেখা না করে যাবেন না বলে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের জানান।

তাছাড়া, রাজ্য সরকার ৫০ হাজার টাকার মুচলেকার বিনিময়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে মুক্তির প্রস্তাব দেয়। তারপর গেস্ট হাউসের আলো-পানি বন্ধ করে দেয়া হয়। তা স্বত্ত্বেও, প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘আলো-পানি ছাড়াই দশ দিন থাকতে হলেও এখানে থাকব। কিন্তু সংঘর্ষে নিহত পরিবারের সাথে নিহত পরিবারের সাথে দেখা না করে ফিরব না।’

আটক অবস্থায় প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বেশ কয়েকটি টুইট করেন। টুইটে বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশ সরকার বারানসির এডিজি ব্রজভূষণ, মির্জাপুরের কমিশনার দীপক আগারওয়াল এবং ডিআইজিকে আমার কাছে পাঠিয়েছেন এটা বলার জন্য যে, ওইসব পরিবারের সঙ্গে দেখা না করেই আমার চলে যাওয়া উচিত। তারা শেষ পর্যন্ত এখানে অপেক্ষা করেছেন।’

প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আরও লিখেছেন, ‘তারা আমাকে কেন কাস্টডিতে নিয়েছে তার ব্যাখ্যা আমাকে দিতে পারেনি। এমনকি তারা আমাকে কোনো কাগজও দেখাতে পারেনি। আজ হাসপাতালে একটা ১৭ বছরের বাচ্চাকে দেখলাম। পেটে গুলি লেগেছে। আমার সন্তানের মতোই তার বয়স। তার মা গুলিবিদ্ধ হয়ে পাশের বিছানায় শুয়ে আছে। রাজ্যের আইন কোথায়?’

প্রিয়াঙ্কা গান্ধী অপর একটি টুইটে বলেছেন, ‘আমার আইনজীবীর কথা অনুযায়ী, আমাকে আটক করার বিষয়টি সব দিক থেকেই বেআইনি। তারা আমাকে উচ্চ পর্যায়ের কথা বলছে। কিন্তু উচ্চ পর্যায়টা কারা সেটা জিজ্ঞেস করলে কিছুই বলতে পারছে না।’

তিন আরও বলেন, ‘আমি তাদের বলেছি যে, কোনো আইন লঙ্ঘন করার উদ্দেশ্যে আমি এখানে আসিনি, আমি এসেছি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে। আমি তাদেরকে বলেছি, আমি সেসব পরিবারের সঙ্গে কথা না বলে কোনোভাবেই যাব না।’

ঢাকাটাইমস/২০জুলাই/আরআর/ইএস