নিষিদ্ধ পিরানহায় সয়লাব সৈয়দপুরের বাজার

প্রকাশ | ২২ জুলাই ২০১৯, ০৮:১১

জাকির হোসেন, সৈয়দপুর (নীলফামারী)

নীলফামারীর সৈয়দপুরের হাট বাজারগুলো চাষাবাদ ও বিক্রয় নিষিদ্ধ পিরানহা মাছে সয়লাব হয়ে গেছে। চলমান মৎস্য সপ্তাহেও রূপচাঁদা নামে দেদারছে বিক্রি অব্যাহত রয়েছে পিরানহা। এনিয়ে উপজেলা মৎস্য অফিসের কোনো তদারকি না থাকায় দিন দিন নিষিদ্ধ এ মাছের বিক্রি বাড়ছে। এতে সাধারণ জনগণ রূপচাঁদা মাছ মনে করে নিষিদ্ধ ও বিষাক্ত মাছটি খাচ্ছে। এর ফলে তারা অজান্তেই চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।

জানা যায়, সৈয়দপুর পৌর এলাকার প্রধান দুটি মাছ বাজারসহ গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারগুলোতে পিরানহা মাছটি রূপচাঁদা মাছ হিসেবে বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। অথচ এ মাছটির ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করে সরকারিভাবে আইন করে পিরানহা মাছ চাষ, ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিষিদ্ধ এ মাছটি যাতে কেউ চাষ বা বিক্রি করতে না পারে তা তদারকির দায়িত্ব রয়েছে মৎস্য বিভাগের। কিন্তু নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলা মৎস্য অফিস এ ব্যাপারে নির্বিকার।

 সৈয়দপুর শহরের মাছ ব্যবসায়ী মংরু বলেন, আমরা জানি মাছটি বিক্রি নিষিদ্ধ। কিন্তু তারপরও এ মাছটি বিক্রির ব্যাপারে মৎস্য অফিস থেকে কোনো বাধা না থাকায় বিক্রি করছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক ব্যবসায়ী জানান, মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ম্যানেজ করেই পিরানহা মাছ রূপচাঁদা হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। তাছাড়া এ নিয়ে উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে কোনো মনিটরিং না থাকায় মাছ ব্যবসায়ীদের মধ্যে এ নিয়ে কোনো সচেতনতা নেই।

গত ১৭ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে মৎস্য সপ্তাহ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, এ ব্যাপারে কোনো কিছুই জানা নেই তাদের। কর্তৃপক্ষ কোনো তথ্যই জানায়নি।

তারা এসময় অভিযোগ করে বলেন, মৎস্য অফিসের লোকজন কোনো অনুষ্ঠানেই আমাদের ডাকে না। মাঠ পর্যায়ে তাদের কে নো কর্মকা-ই আমরা দেখি না। মাঝে মাঝে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হলেও তা উপজেলা তথা অফিস পর্যায়েই সীমাবদ্ধ থাকে।

এ নিয়ে মুঠোফোনে কথা হয় সৈয়দপুর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার সানী খান মজলিশের সাথে। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি। কোথাও নিষিদ্ধ পিরানহা বিক্রি করা হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সৈয়দপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মীর হোসেন এ ব্যাপারে ঢাকা টাইমসকে জানান, তিনি পিরানহা মাছ সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তাই তিনি এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না।

উপজেলার ১০০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আরিফুল হক সোহেল ঢাকা টাইমসকে জানান, পিরানহা মাছটি নিষিদ্ধ ও বিষাক্ত। এটি খাওয়া তো দূরের কথা কোনো কারণে কামড় দিলেও তা মানবদেহের জন্য চরম ক্ষতিকর। এ মাছ খেলে নিরাময় অযোগ্য বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) পরিমল কুমার সরকার ঢাকা টাইমসকে জানান, মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষ্যে অভিযান চলমান রয়েছে। এ ধরনের কোনো নিষিদ্ধ মাছ বিক্রি হলে তা প্রতিহত করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২২জুলাই/জেবি)