অধরাই থেকে যাবে ইউসুফের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন!

ইউসুফ নবি। দরিদ্র পরিবারে জন্ম হলেও নিজের লেখাপড়াটা চালিয়ে গেছেন অনেক কষ্ট করে। লেখাপড়ার পাশাপাশি রাজমিস্ত্রির কাজও করেন ইউসুফ নবি। জীর্ণশীর্ণ কুঠিরে জন্ম নিয়েও স্বপ্ন দেখেন ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু তার স্বপ্ন পূরণে রয়েছে সংশয় ও নানা বাধা।

ইউসুফ নবি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের দক্ষিণ গড্ডিমারী গ্রামের ৪নং ওয়ার্ডের দিনমজুর লুৎফর রহমান ও নয়ন তারা দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান। তিনি হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন সরকারি কলেজ থেকে এ বছর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসিতে জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন। তিনি জেএসসিতে ও এসএসসিতেও জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন।

ইউসুফ নবির বাবার দিনমজুর লুৎফর রহমান বলেন, আমি দিনমজুরের কাজ করি। এই সামান্য আয়ে ছয় সদস্যের পরিবার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। এর মধ্যে আমার চার ছেলেই লেখাপড়া করে। তাদের মধ্যে বড় ছেলে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে, ইউসুফ এবার এইচএসি পাস করলো আর ছোট দুই ছেলে ১০ম ও ২য় শ্রেণিতে পড়ে। তাদের লেখাপড়ার খরচ আমি বহন করতে পারি না। যার কারণে তারা লেখাপড়ার পাশাপাশি অন্যান্য কাজ করে। ইউসুফ নবি অত্যন্ত মেধাবী। তার ইচ্ছে সে ডাক্তার হবে। কিন্তু তার সে ইচ্ছে আমার পক্ষে পূরণ করা সম্ভব নয়। তাই তাকে বলেছি নিজের পড়ার খরচ জোগার করতে পারলে পড়াশোনা কর। না পারলে ঢাকায় গিয়ে গার্মেন্টসে কাজ কর।

ইউসুফ নবি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল আমি বড় হয়ে ডাক্তার হবো। তাই বিজ্ঞান বিভাগ থেকেই লেখাপড়া করেছি। কিন্তু এখন মনে হয় আমার সেই ইচ্ছে আর পূরণ হবে না। গরিবের ঘরে জন্ম নেয়াই কি আমার অপরাধ? শুনেছি সমাজের অনেক বিত্তবানদের সহযোগিতায় অনেকেই লেখাপড়া করছে। অনেক বেসরকারি ব্যাংক থেকে শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে তারা লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। আমার কপালে কি সেটাও জুটবে না?

হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শামসুল হক ঢাকা টাইমসকে জানান, ইউসুফ অত্যন্ত মেধাবী একজন ছাত্র। লেখাপড়ার প্রতি তার প্রচণ্ড আগ্রহ রয়েছে। তবে অর্থনৈতিক সংকট তার লেখাপড়ায় একমাত্র বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা পেলে ইউসুফ তার স্বপ্ন পূরণ করে দেশের সম্পদ হতে পারে।

(ঢাকাটাইমস/২২জুলাই/জেবি)