পরস্পরকে ‘ছেলেধরা’ বলে গণধোলাই খেলেন স্বামী-স্ত্রী

প্রকাশ | ২৩ জুলাই ২০১৯, ২১:৪৮ | আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯, ২১:৫০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ছেলেধরা আতঙ্কে গণপিটুনি এখন দেশজুড়ে আলোচিত বিষয়। সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগের পরও কমছে না এ ধরনের ঘটনা। এবার গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছে এক দম্পতি। নিজেদের রাগের খেসারতে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুরে নয়নপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পারিবারিক বিরোধের জেরে রাগের বশে পরস্পরকে 'ছেলেধরা' বলে চিৎকার করার পর স্থানীয় জনতার হাতে গণধোলাই খান স্বামী-স্ত্রী উভয়েই।

জানা গেছে, স্বামী-স্ত্রী রিকশায় ছিলেন। সাথে স্বামীর এক বন্ধুও। তিনজনকে নিয়ে যখন রিকশাটি চলছিল তখন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে লাগে ঝগড়া। এক পর্যায়ে তা তুমুল আকার ধারণ করে। স্ত্রী অভিযোগ করেন, তিনি শুনেছেন তার স্বামী আরেকটি বিয়ে করেছেন। স্বামী অস্বীকার করছিলেন সেটি। এ নিয়েই বাঁধে বিপত্তি।

স্ত্রী যখন রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেন না তখন লাফ দিয়ে রিকশা থেকে নেমে ‘ছেলেধরা ছেলেধরা’ বলে চিৎকার করে উঠলেন। রিকশা থামিয়ে নামলেন স্বামীও। তিনিও স্ত্রীকে ইঙ্গিত করে পাল্টা ‘ছেলেধরা ছেলেধরা’ বলে চিৎকার শুরু করলেন। ততক্ষণে আশপাশে থাকা মানুষরা দৌড়ে এগিয়ে এলেন। কেউ স্ত্রীর দিকে কেউবা স্বামীর দিকে। পথচারীদের যার কাছে যাকে ‘ছেলেধরা’ মনে হয়েছে তার উপরই হামলে পড়লেন। বাদ পড়লেন না রিকশায় থাকা স্বামীর নিরীহ বন্ধুটিও।

জনতা মিলে তিনজনকে এক চোট গণধোলাই দেয়ার পর মহিলার স্বামী ও বন্ধু কোনোমতে পালিয়ে বাঁচলেও স্ত্রী তানিয়াকে পুলিশ এসে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মার খাওয়ার সময় তানিয়া বারবার বলছিলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে, আমি ছেলেধরা না।’ কিন্তু জনতা তার কথায় কান দেয়নি।

শ্রীপুর থানা পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় বেড়াইদেরচালা গ্ৰামের মুক্তিযোদ্ধা এবিএম তাজউদ্দিনের মেয়ে তানিয়া। তার স্বামীর সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক সময় এলাকার স্থানীয়রা এসে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে দু‘জনকে পিটিয়ে আহত করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তানিয়াকে উদ্ধার করে।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিয়াকত আলী ঢাকাটাইমসকে রাত নয়টার দিকে বলেন, ‘এ ঘটনার সন্দেহে তানিয়াকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে এখানে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝির কারণে ঘটনাটি ঘটেছে, যতটুকু আমরা জানতে পেরেছি।’

(ঢাকাটাইমস/২৩জুলাই/বিইউ/জেবি)