টাকাকে ডলার বানানোর ‘শৈল্পিক প্রতারণা’

প্রকাশ | ২৪ জুলাই ২০১৯, ১৯:৩৭ | আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৯, ২০:৩১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

টাকা থেকে ডলার বানানোর কায়দা কসরতের দাবি ছিল তাদের। লোভ দেখাত, এক হাজার টাকার নোট দিলে ডলার বের করে দেবেন।

পর্যটক সেজে বাংলাদেশে এসে ধনীদের টার্গেট করে এই প্রতারণা করছিল ক্যামেরুনের তিন নাগরিক। তাদের মাধ্যমে প্রতারিত হয়ে কোটি কোটি টাকা খুঁইয়েছেন অনেকে।

মঙ্গলবার রাতে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তারা হলেন: চিকামেন রডরিগ, ডংনেজা গুয়েংগি ও আলেক্সান্ডার মাফেজা।

বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, চক্রটি নিজেদের পরিকল্পনা ও কর্মকৌশলের মাধ্যমে ‘প্রতারণাকে শিল্পের পর্যায়ে’ নিয়ে গেছে। তাদের বুদ্ধিমত্তা যে কাউকে হার মানাবে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।

২০১৭ সাল থেকে চক্রটি প্রতারণা করে আসছে জানিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘ক্যামেরুনের এই তিনজন নাগরিক অনেক শিল্পপতির অফিসে গিয়ে নিজেদের বড় প্রতিষ্ঠানের মালিক পরিচয় দিত এবং ব্যবসায় সম্পর্ক তৈরি করত। এভাবে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে সাদা কাগজকে ডলারে রূপান্তরের টোপ দিত।’

‘পরে টাকাকে ডলারে রূপান্তরের কথা বলে তাদের নির্দিষ্ট স্থানে সাক্ষাতের অনুরোধ জানাত এবং টাকা ডলারে রূপান্তর করতে এক হাজার টাকার নোট নিয়ে যেতে বলতেন। সেই নোটে পাউডার জাতীয় ক্যামিক্যাল, ফয়েল পেপার দিয়ে মুড়িয়ে স্পচটেপ দিয়ে একটি চতুর্ভূজ বান্ডেল তৈরি করে রাখত।’

‘তাদের সঙ্গে থাকা বিশেষভাবে তৈরি প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট বক্স থাকত। যাতে বিদ্যুতের সংযোগ দিলে বিভিন্ন রঙের লাইটিং এবং বিশেষ ধরনের শব্দ সৃষ্টি করে এই বক্সের ভেতরে টাকা রেখে ডলার তৈরির বিশেষ কৌশল দেখিয়ে বিশ্বাস অর্জন করাত।’

‘মোটা অঙ্কের টাকা ডলারে রূপান্তরের লোভ দেখিয়ে তারা ব্যবসায়ীদের প্রলোভন দেখাত। পরে চাহিদা অনুযায়ী টাকার সম-পরিমাণ সাদা কাগজ দিয়ে বান্ডেল তৈরি করে ২৪ ঘণ্টা পর খুলতে বলত। এরপর নিজেদের ঠিকানা বদল করে আসল টাকা নিয়ে সটকে পড়ত।’

ক্যামেরুনের তিন নাগরিকের কাছ থেকে প্রতারণার সরঞ্জাম, মোবাইল ও ডলার উদ্ধার করা হয়েছে।

ঢাকাটাইমস/২৪জুলাই/এসএস/ডব্লিউবি