সার্জারি বিভাগেও ডেঙ্গু রোগী

আশিক আহমেদ, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৬ জুলাই ২০১৯, ০৮:৪৬

রাজধানীর মগবাজারের ইনসাফ বারাকাহ কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালের ৫০৫ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন মাশফিকুর রহমান খাঁন। মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এই ছাত্র গত ১৬ জুলাই আক্রান্ত হয় ডেঙ্গুতে। তিন দিন পর আসে হাসপাতালে। চিকিৎসকরা বলছেন, দুই-তিন দিন পরে বাড়ি যেতে পারবেন।

কিডনি হাসপাতাল হলে কী হবে, এই মুহূর্তে এই চিকিৎসালয়ে ভিড় বেশি ডেঙ্গু রোগীর। একাধিক কর্মকর্তার ভাষ্যমতে, শয্যা খালি নেই। গড়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ রোগী ভর্তি হন। আরও অনেক রোগী আসেন তাদের চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

পাশের আদ্ব দীন হাসপাতালের চিত্রও একই রকম। সেখানেও প্রতিদিন ১০ থেকে ১৩ জন রোগী ভর্তি হয় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে। হাসপাতালের প্রশাসন বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রতিদিনই প্রচুর রোগী আসছে আমাদের এখানে। বিছানার স্বল্পতা থাকায় আমরা তাদের ভর্তি রাখতে পারি না। অনেকেই চিকিৎপত্র নিয়ে চলে যান।’

মগবাজার রেডক্রিসেন্ট হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে বুধবার বিকাল থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ভর্তি হয় ৩২ জন রোগী। চলতি বছর ৬৬৫ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছে সেখানে। এখনো ভর্তি ১৫০ জন।

হাসপাতালের নার্স গোলাপী রানী দাস বলেন, শিশু ওয়ার্ডসহ সব ওয়ার্ডেই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সংখ্য বেশি। আমরা জরুরি বিভাগে রোগীদের দর্শনার্থীদের বসার জায়গা দিতে পারি না। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ ডেঙ্গু রোগী আসছে।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় সরকারি ও বেসরকারি সব হাসপাতালেই এখন হিমশিম অবস্থা। অন্য রোগীদের পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগীদের রাখা হচ্ছে মেডিসিন বিভাগ থেকে শুরু করে সার্জারি বিভাগেও। কোনো কোনো হাসপাতালে ওয়ার্ডের বিছানায় ও বারান্দাতেও রোগীদের চিকিৎসা চলছে। জরুরি অবস্থায় রোগী নিয়ে যেতে হচ্ছে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে।

শয্যা না থাকলে বেসরকারি হাসপাতাল রোগী ভর্তি করে না। আর সরকারি হাসপাতাল কোনো রোগী ফেরত পাঠায় না।

গতকাল সবচেয়ে বেশি ভর্তি ছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ওই হাসপাতালে মোট ৪০৬ জন ভর্তি ছিল। এর মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয় ১৪৫ জন। ৭০২ নম্বর ওয়ার্ডের ৭ নম্বর কক্ষের ৮টি শয্যার সবাই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত।

এ পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ২০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর তথ্য মিলেছে হাসপাতাল ঘুরে। তবে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ৮।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন ও নিয়ন্ত্রণ কক্ষের হিসাবে গতকাল পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৪২১। এ বছর এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৮ হাজার ৫৬৫ জন।

অবশ্য এই সংখ্যাটির চেয়ে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি বলে গণমাধ্যমে তথ্য আসছে। যদিও যে সংখ্যাটি গণমাধ্যম উল্লেখ করছে, সেটা মানতে চাইছেন না ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন।

ডেঙ্গুর বিস্তারের মধ্যে উচ্চ আদালতেও এ নিয়ে শুনানি হয়েছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের আইনজীবীদেরকে পড়তে হয়েছে তোপের মুখে। মশা নিধনে ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে ওঠা প্রশ্ন অস্বীকার করলেও দুই সিটি করপোরেশন থেকে ওষুধ পাল্টানোর ঘোষণাও এসেছে।

ঢাকাটাইমস/২৬জুলাই/এএ/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :