রেনু হত্যা
আদালতে হৃদয়-রিয়ার ‘দোষ স্বীকার’
রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামি হৃদয় ওরফে ইব্রাহিম তার দায় স্বীকার করেছেন। পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষ হওয়ার আগেই তিনি আদালতে জবানবন্দিতে নিজের অপরাধ স্বীকার করেছেন।
রেনুকে ‘ছেলেধরা’ বলে উত্তেজনা তৈরির অভিযোগে গ্রেপ্তার রিয়া খাতুনও আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শুক্রবার ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মাদ মিল্লাত হোসেন এই দুই জনের জবানবন্দি গ্রহণ করে কারাগারে পাঠান।
গত মঙ্গলবার রাতে হৃদয়কে নারায়ণগঞ্জের ভুলতা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত। ৩০ জুলাই তাকে রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করার কথা ছিল। তবে তৃতীয় দিনে তিনি দোষ স্বীকার করতে রাজি হন তিনি। পরে তাকে আদালতে তোলা হয়।
পদ্মা সেতু নির্মাণে এক লাখ মানুষের মাথা লাগবে বলে সামাজিক মাধ্যমে উদ্ভট তথ্য ছড়িয়ে সারাদেশে উন্মাদনার মধ্যে গত ২০ জুলাই বাড্ডার একটি স্কুলে গণপিটুনিতে হত্যা করা হয় রেনুকে। এই পিটুনির ভিডিও প্রকাশ হয়েছে ফেসবুকে। পরে তদন্তে জানা যায়, রেনু তার মেয়েকে ভর্তির জন্য খোঁজ নিতে ওই স্কুলে গিয়েছিলেন। আর স্কুলে ঢুকার সময় অভিবাবকদের জটলা থেকে একজন তার ঠিকানা জিজ্ঞেস করেন।
রেনুর বাসা ছিল মহাখালীতে। বাড্ডায় তিনি স্কুলে গেছেন বলে এক অভিভাবক তাকে ‘ছেলেধরা’ সম্বোধন করেন। এরপর শুরু হয় উত্তেজনা। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার কক্ষ থেকে টেনে হিঁচরে বের করে এনে পিটিয়ে হত্যা করা হয় তাকে।
তদন্ত চলার সময় শনাক্ত হন ওই নারী। বৃহস্পতিবার স্কুল থেকে আটক করা হয় রিয়া খাতুনকে। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই দোষ স্বীকার করতে রাজি হন। আর তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার ইন্সপেক্টর আব্দুর রাজ্জাক তাদের জবানবন্দি গ্রহণ করানোর জন্য আদালতে হাজির করেন।
এ মামলায় জাফর হোসেন নামে আরেক অভিযুক্ত এর আগে গত ২২ জুলাই দোষ স্বীকার করে কারাগারে রয়েছেন।
মামলাটিতে মুরাদ মিয়া, সোহেল রানা, মো. বিল্লাল, আসাদুল ইসলাম, মো. রাজু, মো. শাহীন, মো. বাচ্চু মিয়া, মো. বাপ্পি, মো. কামাল হোসেন ও আবুল কালাম আজাদ রিমান্ডে রয়েছেন।
রেনু হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন নিহতের ভাগনে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু।
রেনু লেখাপড়া শেষে আড়ং ও ব্র্যাকে চাকরি করেছেন। স্কুলেও করেছেন শিক্ষকতা। প্রায় দুই বছর আগে স্বামী তসলিম হোসাইনের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে মায়ের সঙ্গে মহাখালীর ওয়্যারলেস গেটের একটি ভাড়া বাসায় ছেলে-মেয়েকে নিয়ে থাকতেন।
ছেলেকে ছয় মাস আগে তার বাবা গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা বড়ভাই মো. আজগার আলীর কাছে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেলেন রেনু।
ঢাকাটাইমস/২৬জুলাই/ডব্লিউবি