চাঁদপুরে ভয়াবহ ভাঙন, আতঙ্কে নদীপাড়ের মানুষ

চাঁদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৬ জুলাই ২০১৯, ২২:০৮

চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী এলাকায় মেঘনার ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে করে ৩০০ কোটি টাকায় নির্মিত চাঁদপুর-হাইমচর শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন ঠেকাতে ও শহররক্ষা বাঁধ রক্ষায় জিও ব্যাগ নিক্ষেপ করে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

গত দুই দিনে ভাঙন এলাকার প্রায় এক হাজার কি.মি. জমি নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে। শহর রক্ষা বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ফাটল দেখা দিয়েছে। এ ফাটলের কারণে এলাকার হাজার-হাজার মানুষ মারাত্মক আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।

এছাড়া চাঁদপুর সদর উপজেলার ১৪নং রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত দুই দিন ধরে পদ্মা মেঘনা নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় এতে প্রবল সোতের সৃষ্টি হয়ে এ ইউনিয়নে তীব্র নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।

ভাঙনের কবলে ইতোমধ্যে রাজারচর, মান্দের বাজার, খাসকান্দি, লগ্মীমারাচর, দেওয়ান বাজার এলাকার প্রায় দুই শতাধিক পরিবার বসতভিটাহীন হয়ে গেছে এবং এসব এলাকার বেশ কয়েকটি অংশ ভেঙে যায়। ঘরবাড়ি হারানো পরিবারগুলো ইউনিয়নের বাঁশগাড়ি, মাঝেরচর, গোয়াল নগর, রায়েরচরসহ বিভিন্ন উঁচু এলাকায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। মাটি ধস অব্যাহত থাকায় ভাঙনের মুখে রয়েছে আরো শত-শত ঘর-বাড়ি।

হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌসী বেগম বলেন, ভাঙন এলাকা আমি পরিদর্শন করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের অতি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যে নির্দেশনা দিয়েছি।

অপরদিকে সদর উপজেলার রাজরাজেশ্ব এলাকায় হঠাৎ উত্তরাঞ্চলের পানি পদ্মা ও মেঘনা নদী দিয়ে নেমে যাওয়ার ফলে নদীতে প্রবল স্রোত দেখা দেয়। ফলে রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে ভাঙনের সৃষ্টি হয়।

পদ্মার ভাঙনে এ পর্যন্ত দুই শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভিটে-মাটি হারানো পরিবারগুলোর মাঝে চলছে আহাজারি। আবার আতঙ্কিত অনেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্র সরিয়ে নেয়ার কাজে।

রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী জানান, উজান থেকে প্রবল বেগে বন্যার পানি চাঁদপুর মেঘনা নদী দিয়ে বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত হওয়ায় রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের চর এলাকায় মেঘনা ও পদ্মা নদীর মিলনস্থলে প্রচণ্ড ঢেউ সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে নদী ব্যাপক আকারে ভাঙছে। এ পরিস্থিতিতে ইউনিয়নের রাজারচর, মান্দের বাজার, খাসকান্দি, লগ্মীমারাচর, দেওয়ান বাজার এলাকার প্রায় দুই শতাধিক পরিবার বসতঘর ভাঙনের কবলে পড়েছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা জানান, চাঁদপুরে কয়েকদিন ধরে পদ্মা-মেঘনার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবছরেই নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে রাজরাজেস্বর ইউনিয়নে ভাঙন দেখা দেয়। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাঙন প্রতিরোধে কাজ করছি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান বলেন, ভাঙনকবলিত স্থানে বসতভিটা, মসজিদ, জায়গা-জমি নদীর ভাঙনে বিলীন হওয়া থেকে রক্ষাকল্পে দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলার মাধ্যমে নদী ভাঙন থেকে এই এলাকাকে রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। খুব সহসাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগযোগ করে স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৬জুলাই/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :